ক্লেন্টনের পাশে দাঁড়ালেন সাম্বা দেশের ফুটবলার থেকে বাগানের প্রাক্তন ফুটবলার!

বিশ্ব ফুটবল (World Football) যখন নিয়মের কঠোর প্রয়োগে খ্যাতি অর্জন করছে, তখন ভারতীয় ফুটবলে (Indian Football) রেফারিং নিয়ে সারা বছরই সমালোচনা চলতে থাকে। হায়দরাবাদ এফসি…

Cleiton Silva foul by Hyderabad FC Goalkeeper where FormercFootballer Criticize on Indian Refreeing

বিশ্ব ফুটবল (World Football) যখন নিয়মের কঠোর প্রয়োগে খ্যাতি অর্জন করছে, তখন ভারতীয় ফুটবলে (Indian Football) রেফারিং নিয়ে সারা বছরই সমালোচনা চলতে থাকে। হায়দরাবাদ এফসি (Hyderabad FC) বনাম ইস্টবেঙ্গল (East Bengal FC) ম্যাচে লাল-হলুদ অধিনায়ক ক্লেন্টন সিলভাকে (Cleiton Silva) প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক (Hyderabad FC Goalkeeper) আর্শদীপ সিংয়ের করা এক বিপজ্জনক ফাউল (Foul) যেন আরও একবার ফুটবলপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন তৈরি করেছে—ভারতীয় ফুটবলে রেফারিংয়ের (Indian Refreeing) মান কতটা উন্নত? এই ঘটনা সরব হলেন সাম্বা দেশের প্রাক্তন ফুটবলার (Former Footballer) ডগলাস সিলভা (Douglas Silva) থেকে শুরু করে বাগানের প্ৰাক্তন গোলরক্ষক শিল্টন পাল (Shilton Paul)।

দর্শক ভর্তি গ্যলারিতে সতীর্থকে একী শেখালেন রোহিত শর্মা?

   

এই ম্যাচের প্রথমার্ধে যখন ইস্টবেঙ্গলের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ক্লেইটন সিলভা প্রতিপক্ষের গোলবক্সে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন, তখন হায়দরাবাদ গোলরক্ষক আর্শদীপ সিং তাঁর বিরুদ্ধে এক ভয়ানক ট্যাকল করেন। গোলরক্ষকের পা সোজা ক্লেইটনের বুকের দিকে চলে যায়, যা ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং গুরুতর আঘাতের কারণ হতে পারত। স্বাভাবিকভাবেই, এই ধরনের আক্রমণকে ফাউল হিসেবে গন্য করা উচিত ছিল এবং এর জন্য রেফারির পক্ষ থেকে সরাসরি লাল কার্ড প্রদানের কথা ছিল। কিন্তু চমকপ্রদভাবে, রেফারি একেবারেই নীরব ছিলেন, কোন ফাউলও দেননি, বরং আর্শদীপ সিংকে হলুদ কার্ড বা কোন সতর্কীকরণ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

চিন্তিত সমর্থকরা! ডার্বি নিয়ে ধোঁয়াশা, সুবিধা পাবে ইস্টবেঙ্গল?

ভারতের ফুটবলে এই ধরনের ঘটনা নতুন কিছু নয়, কিন্তু যখন এমন ঘটনা ঘটে, তখন এই প্রশ্ন উঠতেই পারে—ভারতীয় ফুটবলে রেফারিং মানে কি? যদিও রেফারি ইস্যুতে একাধিকবার সরব হতে দেখা গিয়েছে ময়দানের তিন প্রধান তথা ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং আইএসএলে নবনিযুক্ত দল মহামেডান এসসির কর্ম কর্তাদের। এমনকি মিনি ডার্বিতে জোড়া লাল কার্ড ইস্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে রেফারির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন খোদ লাল-হলুদের নব নিযুক্ত স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজো।

মাইলফলক ম্যাচের আগে সমর্থক থেকে ফুটবলারদের নিয়ে আবেগপ্রবণ খালিদ জামিল

গতকালের ঘটনায় বাগানের প্রাক্তন গোল রক্ষক শিল্টন পাল নিজস্ব ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “এ ধরনের বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জের শাস্তি হিসেবে ইউরোপের প্রথমসারির লিগগুলোতে গোলরক্ষককে সরাসরি লাল কার্ড এবং বেশ কিছু ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করা হতো। তবে এখানে আমাদের রেফারির আচরণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”

শিল্টন পাল শুধুমাত্র নিজের অভিজ্ঞতা থেকে কথা বলেননি, তিনি ফুটবলের মৌলিক নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলেছেন। গোলরক্ষকদের একাধিক কঠিন দায়িত্ব থাকে—মাঠে তাঁদের কর্তব্য শুধুমাত্র গোল রক্ষা করা নয়, দলের প্রতিরক্ষার অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে তারা নিজেদের জীবনও ঝুঁকিতে ফেলে। এই ধরনের আক্রমণ যদি তাদের ওপর হয়, তবে তা দলের পক্ষে মারাত্মক হতে পারে। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলে এই ধরনের গুরুতর চ্যালেঞ্জের পরেও শাস্তি না হওয়া অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি করেছে—এটা কি শুধু একেবারে সাধারণ ভুল, নাকি ভারতীয় ফুটবলের রেফারিংয়ের মানের চরম অবনতি?

চোট এবং কার্ড সমস্যার পর নতুন করে একী রোগ ফের বাগান শিবিরে!

এদিকে, ডগলাস দ্য সিলভা, প্রাক্তন লাল-হলুদের ডিফেন্ডারও এই বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। তিনি লেখেন, “আজ মনে হচ্ছিল যে আমি হয়তো আরেক ব্রাজিলিয়ান বন্ধুকে মাঠে হারিয়ে ফেলব। অন্য দেশে এমন ঘটনা ঘটলে এই গোলরক্ষককে শুধুমাত্র লাল কার্ডই দেওয়া হতো না, বরং বেশ কয়েকটি ম্যাচের জন্য সাসপেন্ডও করা হতো।”

এই ধরনের অবহেলা ফুটবলের মৌলিক ধারণা এবং খেলোয়াড়দের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ফুটবল মাঠে এমন বিপজ্জনক ফাউলের পরও কোনো শাস্তি না পাওয়া এক ধরনের খেলা নিয়ে তামাশা হিসেবে গণ্য হতে পারে, যা শুধু খেলোয়াড়দের জন্য নয়, সমর্থকদের জন্যও হতাশাজনক। আজকাল, যেখানে আন্তর্জাতিক ফুটবলে রেফারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (VAR) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, সেখানে ভারতীয় ফুটবলে এই ধরনের খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত সমর্থকদের মনোবল ভেঙে দেয়।

প্রথম ছয় লক্ষ্য জামিলের, বছরের শেষ ম্যাচ জিততে মরিয়া কেরালা

কিছু বিশ্লেষক বলছেন, এই পরিস্থিতির জন্য শুধুমাত্র রেফারির উপর চাপ ফেলা উচিত নয়, বরং ফেডারেশন এবং লিগ কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব রয়েছে। ভারতের ফুটবল ফেডারেশন যদি তার খেলাধুলার মান উন্নত করতে চায়, তবে রেফারিংয়ের মান এবং খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। ফুটবল একটি স্লোগান, একে শুধু খেলা নয়, এটি খেলোয়াড়দের শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এবং শ্রদ্ধার জায়গাও হওয়া উচিত।

ফুটবলের উন্নতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে খেলার প্রতি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা এবং সেটি যদি শুরু হয় রেফারিং এবং রেফারির সঠিক ভূমিকা থেকে, তবে ভারতীয় ফুটবল দ্রুত আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে পারে।