সতর্কতা জারি: ২০২৫-এর শুরুতেই রাজধানীতে প্রবল শীতের পূর্বাভাস

Weather Update: নতুন বছরের শুরুতেই উত্তর ভারত জুড়ে প্রবল শীতের প্রবাহ আসন্ন। জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং আশেপাশের অঞ্চলে গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হওয়া বৃষ্টিপাতের কারণে…

bustling cityscape of Delhi under a clear, crisp winter sky

Weather Update: নতুন বছরের শুরুতেই উত্তর ভারত জুড়ে প্রবল শীতের প্রবাহ আসন্ন। জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং আশেপাশের অঞ্চলে গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হওয়া বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) জানিয়েছে যে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের একাধিক এলাকায় ২০২৫ সালের জানুয়ারির প্রথম দিনগুলোই প্রবল শীতের দাপট অনুভূত হবে।

উত্তর-পশ্চিম ভারতে তাপমাত্রা ৩-৫ ডিগ্রি কমার পূর্বাভাস
IMD-এর তথ্য অনুযায়ী, উত্তর-পশ্চিম ভারতে আগামী দুই দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩-৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমার সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিম ও মধ্য ভারতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রার বিশেষ কোনো পরিবর্তন না হলেও, পরবর্তী তিন দিনে এই এলাকাগুলিতেও ৩-৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা কমতে পারে। পূর্ব ভারতে তাপমাত্রা আপাতত স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করা হলেও, পরবর্তী দিনগুলোয় সেখানে ২-৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পশ্চিম হিমালয়ে তুষারপাতের সম্ভাবনা
এছাড়া, পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলে জানুয়ারি ১ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে দুটি নতুন পশ্চিমী ঝঞ্ঝার (Western Disturbance) প্রভাব পড়বে। এই সময়ে হালকা বৃষ্টি এবং তুষারপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে IMD। দিল্লিতে ইতিমধ্যেই একটি হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আগামী তিন দিনে দিল্লিতে মূলত পরিষ্কার আকাশ এবং মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার পূর্বাভাস রয়েছে।

দিল্লিতে ডিসেম্বরে রেকর্ড বৃষ্টিপাত
IMD-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দিল্লিতে চলতি ডিসেম্বরে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪২.৮ মিমি ছুঁয়েছে, যা গত ১৫ বছরে ডিসেম্বরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এই বৃষ্টিপাতের কারণ হিসাবে সক্রিয় পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং পূর্বী বাতাসের মিথষ্ক্রিয়াকে দায়ী করা হয়েছে। এর ফলে দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত হয়েছে।

ঠান্ডা হাওয়া এবং ঘন কুয়াশার পূর্বাভাস
দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ এবং গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে ৩০ এবং ৩১ ডিসেম্বর ঠান্ডা হাওয়া পরিস্থিতি বিরাজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, সাব-হিমালয় পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, মিজোরাম এবং ত্রিপুরার মতো একাধিক অঞ্চলে ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঘন কুয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি
প্রবল শীত এবং ঘন কুয়াশার কারণে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষত, উত্তর ভারতের বাসিন্দাদের জন্য এই পরিস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। পরিবহন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটতে পারে, বিশেষত রেল এবং বিমান পরিষেবা দেরি বা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisements

সরকারি সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই প্রস্তুত রয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে যথাসম্ভব সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর নাগরিকদের প্রয়োজনীয় গরম পোশাক পরিধান করার, ঘর থেকে অপ্রয়োজনীয় বাইরে না বেরোনোর এবং বয়স্ক ও শিশুদের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

পরিবেশগত প্রভাব
এ ধরনের ঠান্ডা আবহাওয়া এবং বৃষ্টিপাত কৃষিক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত, উত্তর ভারতের যেসব এলাকায় গম এবং সরিষার মতো শীতকালীন ফসল চাষ করা হয়, সেখানে বৃষ্টিপাত এবং শৈত্যপ্রবাহের কারণে ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে।

২০২৫ সালের জানুয়ারির শুরুতেই উত্তর ভারত প্রবল শীতের কবলে পড়তে চলেছে। দিল্লির বাসিন্দাদের পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যের মানুষদের এই ঠান্ডার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা এবং নির্দেশিকা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি এবং বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

নতুন বছরের শুরুতে এই শৈত্যপ্রবাহ এবং তুষারপাত প্রকৃতির এক অন্যরকম রূপ উপহার দিলেও, এর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি।