BSF: মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ (বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স) তিন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করেছে। গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিএসএফ সেদিন সীমান্ত এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে এবং একে একে গ্রেফতার করে এই তিন বাংলাদেশি নাগরিককে। ধৃতদের নাম কামাল হোসেন, শাহাদাত আলী ও হযরত আলী বলে জানা গেছে। তারা বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন বলে বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে।
গোপন সূত্রে খবর পাওয়ার পর তল্লাশি অভিযান
বিএসএফ-এর এক উঁচু পদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমাদের কাছে গোপন সূত্রে খবর ছিল যে, কিছু বাংলাদেশি নাগরিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। সেই অনুযায়ী, আমরা জলঙ্গি সীমান্তে তল্লাশি শুরু করি। তল্লাশি চালানোর পর তিন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়।” বিএসএফ আরো জানিয়েছে, ধৃত তিনজনের কাছে কোনও বৈধ কাগজপত্র ছিল না এবং তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল।
ধৃতদের পরিচয় ও পরবর্তী পদক্ষেপ
ধৃত তিন বাংলাদেশি নাগরিকের বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বিভিন্ন এলাকায়। কামাল হোসেন, শাহাদাত আলী এবং হযরত আলী তাদের দেশের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মাটিতে কী উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিল, তা নিয়ে বিএসএফ গভীরভাবে তদন্ত শুরু করেছে। যদিও এখনো তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়, তবে পুলিশ এই ঘটনার পেছনের কারণ জানার জন্য তদন্ত করছে।
ধৃতদের পরে জলঙ্গি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং ভারতের ভিতরে তাদের প্রবেশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যেই, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির আওতায় মামলা রুজু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার
এ ঘটনার পর বিএসএফ সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করেছে। জলঙ্গি সীমান্তে বিএসএফ-এর নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকানো যায়। বিএসএফ আরও জানিয়েছে, সীমান্তে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং সীমান্তের কাছে বসবাসকারী মানুষদেরও সতর্ক করা হয়েছে। বিএসএফ’র প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং অনুপ্রবেশকারীদের ধরার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
পূর্বে ঘটে যাওয়া অনুপ্রবেশের ঘটনা
এ ধরনের অনুপ্রবেশ নতুন কিছু নয়। ভারতের সীমান্তে মাঝে মাঝে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা প্রবেশ করে, যার মধ্যে অনেকেই অবৈধভাবে কাজ করার উদ্দেশ্যে আসে। মুর্শিদাবাদ জেলা বিশেষভাবে এই ধরনের ঘটনা নিয়ে পরিচিত, কারণ এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্যতম সীমান্ত জেলা যেখানে বাংলাদেশ সীমান্তের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। অতীতে একাধিকবার বিএসএফ এই ধরনের অনুপ্রবেশকারীদের আটক করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
জলঙ্গী থানার পুলিশ তদন্তে
জলঙ্গী থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই এই তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের দাবি, তাদের সঙ্গে আরও কেউ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, “আমরা এ ব্যাপারে পূর্ণ তদন্ত করছি এবং কী কারণে তারা ভারত প্রবেশ করেছে তা জানার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”
এবারের এই গ্রেফতারি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলে ধরেছে। বিএসএফ এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আরও সতর্ক হয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এই ধরনের অভিযান আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিএসএফ এবং পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে যাতে সীমান্তের নিরাপত্তা বজায় রাখা যায় এবং অনুপ্রবেশকারীরা কোনোভাবেই ভারতে প্রবেশ করতে না পারে।