পাটনায় প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর (Atalbihari Vajpayee) জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে গতকাল নাটকীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়, যখন একজন লোকসঙ্গীত শিল্পী “রাঘুপতি রাঘব রাজা রাম” ভজন গাইতে শুরু করেন।
দেবী নামে একজন লোকসঙ্গীত শিল্পী এই ভজনটি গাইছিলেন, যা মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। কিন্তু, তিনি যখন “ইশ্বর আল্লাহ তেরো নাম” এই লাইনটি পরিবর্তন করে “শ্রী রাঘুনন্দন জয় সীযা রাম, জনকী বল্লভ সীতা রাম” গানটি গাইতে শুরু করেন, তখন একাংশ শ্রোতা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর, প্রতিবাদ থামল না, বরং আরও তীব্র হতে থাকে।
ভারত-ভূখণ্ডের বিকৃত ম্যাপ কংগ্রেসের, নেপথ্যে জর্জ সরোসের চক্রান্ত, আক্রমণ বিজেপির
এই পরিস্থিতিতে, এক ব্যক্তি মঞ্চের দিকে এগিয়ে এসে গানের শিল্পীর কানে কিছু বলেন। তাতে শিল্পী গান থামিয়ে দেন এবং বলেন, “ঈশ্বর সবার, আমি রামের স্মরণ করতে চেয়েছিলাম।” এরপর, এক অনুষ্ঠান আয়োজক সামনে এসে “জয় শ্রী রাম” স্লোগান তুলেন এবং বলেন, “তার উদ্দেশ্য সঠিক ছিল।”
এটি একটি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে দাঁড়ায়, যেখানে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা এবং মানুষের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা রাখা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। এই ঘটনায় ভারতের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসে।
“রাঘুপতি রাঘব রাজা রাম” গানটি ঐতিহাসিকভাবে মহাত্মা গান্ধীর পছন্দের ভজন ছিল এবং তিনি এটি একাধিকবার গাইতেন। গানটির মধ্যে ভারতের বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে শান্তি ও ঐক্যের বার্তা ছিল। তবে, যখন দেবী শিল্পী গানটি গাইতে গিয়েছিলেন এবং কিছু লাইন পরিবর্তন করেন, তখন একটি অংশের শ্রোতাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তারা মনে করেন যে, গানটির আসল সংস্করণ বজায় রাখা উচিত ছিল, যাতে ধর্মীয় ঐক্য এবং শ্রদ্ধা বজায় থাকে।
চিনকে রুখতে দাওয়াই, এবার ভারত মহাসাগরে দাপিয়ে বেড়াবে মিশাইল ডেস্ট্রয়ার INS Surat
দ্বিতীয়ত, শিল্পী যখন তার গান থামিয়ে এবং তার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে জানান, তখন বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে। তিনি জানান, তার উদ্দেশ্য ছিল রামের স্মরণ করা এবং এর মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, তবে কিছু অংশের শ্রোতা এই বক্তব্য গ্রহণ করতে পারেননি। এই ঘটনাটি আরও একটি প্রশ্ন তুলে ধরেছে, তা হল ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি কতটুকু শ্রদ্ধা রাখা প্রয়োজন এবং কোনো সংস্কৃতির বা ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে কীভাবে সঠিকভাবে ভাষার প্রয়োগ করা উচিত।
কংগ্রেসের ম্যাপে বাদ অধিকৃত কাশ্মীর-আকসাই চিন
বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য এমন সঠিক পদক্ষেপের প্রয়োজন, যা কোনো বিশেষ ধর্মের প্রতি অসম্মান বা বিতর্কের সৃষ্টি না করে। ভারতের বহুজাতিক সমাজে ধর্মীয় অনুভূতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই ধরনের ঘটনার মাধ্যমে সমাজে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধার প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
এই ঘটনাটি রাজনৈতিক মঞ্চেও এক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যেখানে বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মতামত প্রকাশিত হচ্ছে। তবে, সবশেষে, সকলের উদ্দেশ্য ছিল দেশের শান্তি এবং ঐক্য বজায় রাখা, যা এই ধরনের বিতর্ক থেকে শিক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে সম্ভব।