তথাগত রায়, প্রাক্তন রাজ্যপাল এবং রাজনীতিবিদ, একবার আবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। সম্প্রতি তিনি (Tathagata Roy) সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে এমন একটি মন্তব্য করেছেন যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। বাংলাদেশিদের তিনি ‘কালীঘাটের কুকুর’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তার এই মন্তব্য ঘিরে রাজনীতির ময়দানে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তাপ ছড়িয়েছে।
মন্তব্যের প্রেক্ষাপট
তথাগত রায় টুইটারে উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশি হেলিকপ্টারই শেখ হাসিনাকে ভারতের আগরতলায় পৌঁছে দিয়েছিল। তারাই আবার এখন হাসিনাকে ফেরত চাইছে, আজব ব্যাপার! বহুকাল আগে আইন ক্লাসে পড়েছিলাম, ইসলামী আইনে হিবা-বিল-ইওয়াজ বলে কিছু আছে, কারুকে একটা উপহার দিয়ে সেটা আবার ফেরত চাওয়া যায়। আমাদের বাংলায় আমরা এদের ‘কালীঘাটের কুকুর’ বলি।”
প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা
তার এই মন্তব্যের পরপরই সামাজিক মাধ্যম এবং রাজনৈতিক মহলে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে। অনেকেই এটিকে বাংলাদেশি জনগণের প্রতি অবমাননাকর এবং অপ্রয়োজনীয় আক্রমণ বলে চিহ্নিত করেছেন।
তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতারা তথাগত রায়ের বক্তব্যের নিন্দা করেছেন। তারা বলেছেন, এই ধরনের ভাষা একটি দায়িত্বশীল নেতার কাছ থেকে আশা করা যায় না।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই মন্তব্য নিয়ে প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বলেছেন, এটি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও অবনতি করতে পারে এবং এই ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য বন্ধ হওয়া উচিত।
তথাগত রায়ের ব্যাখ্যা
এই বিতর্কের পর তথাগত রায় তার মন্তব্যের পক্ষে সাফাই দিয়ে বলেন, এটি একটি রাজনৈতিক ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য ছিল এবং তার বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, তার কথার মূল উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশি রাজনীতির দ্বিচারিতা তুলে ধরা।
রাজনৈতিক প্রভাব
তথাগত রায়ের এই মন্তব্যে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওপর কোনো দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবে এটি স্পষ্ট যে এই ধরনের মন্তব্য দুই দেশের সম্পর্কের প্রতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সামাজিক প্রতিক্রিয়া
সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভাজন দেখা যাচ্ছে। একদিকে, অনেকেই তথাগত রায়ের মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন এবং বলেছেন, এটি শুধুমাত্র একটি তিক্ত সত্য তুলে ধরেছে। অন্যদিকে, অনেকেই তার মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন এবং এটিকে অশালীন ও অবমাননাকর বলে উল্লেখ করেছেন।
তথাগত রায়ের এই মন্তব্য তার রাজনৈতিক কেরিয়ারে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে। এমন মন্তব্য তার জনপ্রিয়তা বাড়াবে নাকি তাকে আরও একঘরে করে দেবে, তা সময়ই বলবে। তবে এই মন্তব্য একবার আবার রাজনীতি এবং সামাজিক সম্পর্কের মাঝে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। তথাগত রায়ের বক্তব্য রাজনীতির ময়দানে কতটা প্রভাব ফেলবে এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখবে, তা এখন দেখার বিষয়।