ভারত কি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পাঠাবে?

will sheikh hasina back to bangladesh প্রসেনজিৎ চৌধুরী: সে এক চরম রুদ্ধশ্বাস দুপুরবেলা। শ্রাবণের সেই দুপুরে বৃষ্টি হয়নি। ঢাকা নগরের চারপাশ থেকে জনপ্লাবন ঘিরে ধরেছিল…

will sheikh hasina back to bangladesh

will sheikh hasina back to bangladesh

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: সে এক চরম রুদ্ধশ্বাস দুপুরবেলা। শ্রাবণের সেই দুপুরে বৃষ্টি হয়নি। ঢাকা নগরের চারপাশ থেকে জনপ্লাবন ঘিরে ধরেছিল সরকারকে। ছাত্র-গণবিক্ষোভে জ্বলছিল বাংলাদেশ। গত ৫ আগস্ট দিনটি ছিল এমনই তীব্র ঘটনাবহুল। সেই দিন ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ‘গণভবন’ ও জাতীয় সংসদের দখল নিয়েছিল অজস্র জনতা। কোনওরকমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে পাঠিয়ে দেন। এরপর বাংলাদেশের সেনা বিমানে ভারতে চলে আসেন। (will sheikh hasina back to bangladesh)

‘শেখ শাহী’ শাসনে ইতি will sheikh hasina back to bangladesh

সেই শ্রাবণের দুপুরে বাংলাদেশে শেষ হয়ে গেছে টানা সাড়ে পনের বছরের ‘শেখ শাহী’ শাসন। বাংলাদেশে ‘গণহত্যাকারী’ ও ‘স্বৈরাচারী’ হিসেবে মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা। তার বিচার ও ফাঁসির দাবি উঠেছে বাংলাদেশে। এ দেশের অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালে যে মামলা চালাচ্ছে তাতে শেখ হাসিনা মূল অভিযুক্ত।

   

শেখ হাসিনাকে দ্রুত ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। হাসিনাকে ফেরত চেয়ে (প্রত্যর্পণ) ঢাকার পাঠানো চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছে নয়াদিল্লি। ‘আশ্রিত’ শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পন চুক্তি অনুসারে ফেরত পাঠানো হবে কি ? এমনই প্রশ্ন ঘুরছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে।

ভারত-বাংলাদেশ ‘প্রত্যর্পণ’ চুক্তি will sheikh hasina back to bangladesh

কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ‘প্রত্যর্পণ’ বিষয়টি যে কোনও দুই দেশের মধ্যে চুক্তি অনুসারে হয়ে থাকে। আর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ‘প্রত্যর্পণ’ চুক্তি আছে। সেই চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে ‘গণহত্যাকারী’ হিসেবে চিহ্নিত শেখ হাসিনা। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন যে বর্তমানে বিষয়ে নতুন দিল্লির কোনও মন্তব্য নেই।

হাসিনার বিষয়ে কূটনৈতিক নীরব থাকবে ভারত will sheikh hasina back to bangladesh

কূটনীতিকরা মনে করছেন বিদেশ মন্ত্রক শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাননোর বিষয়ে নীরব থাকবে। এর কারণ, তিনি ভারত ঘনিষ্ঠ। তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানও ভারত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বাংলাদেশের মতো অতি ঘনিষ্ঠ পড়শি দেশের আর কোনও শাসক এতটা শেখ পরিবারের মতো নয়াদিল্লির ‘বিশ্বাসভাজন’ নয়। এ ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি লঙ্ঘন হলেও নয়াদিল্লি সেটি পরোয়া করবে না বলে মনে করা হচ্ছে।

কী সেই প্রত্যর্পণ আইনি ধারা?

বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল প্রত্যর্পণ চুক্তি। এই চুক্তি যখন সই হয় তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং।

বিবিসি জানিয়েছে, প্রত্যর্পণ চুক্তির একটি ধারা হল যে ব্যক্তির হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যদি ‘রাজনৈতিক প্রকৃতি’র হয় তাহলে সেই অনুরোধ খারিজ করা যাবে। চুক্তির আর একটি ধারা হল, যদি অনুরোধপ্রাপক দেশের মনে হয় “অভিযোগগুলো শুধুমাত্র ন্যায় বিচারের স্বার্থে, সরল বিশ্বাসে আনা হয়নি” তাহলে তাদের সেটি নাকচ করার ক্ষমতা থাকবে।
কূটনৈতিক মহলের অভিমত, বাংলাদেশ সরকারের তরফে শেখ হাসিনাকে ফেরত চা়ওয়ার আবেদন এলেই প্রত্যর্পণ চুক্তির দ্বিতীয় ধারাটির বলে আবেদন বাতিল করা হবে।

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলে বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তির উল্লিখিত ধারায় শেখ হাসিনার রক্ষাকবচ হয়ে গেছে। ভারতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারও তাদের পূর্বসুরী কংগ্রেসের

আন্তর্জাতিক আইনজীবীর বিস্ফোরক দাবি

ঢাকায় এসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন টবি ক্যাডম্যান। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার বিচারের ব্যাপারে বাংলাদেশে যে আইন আছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের পর যদি ফেরত না পাঠানো হয় তাহলে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার বিবেচনা করবে। যদি প্রয়োজন হয় সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহযোগিতা নেওয়া যায় কিনা তা বাংলাদেশ সরকার ঠিক করবে।’

 Bangladesh: massive student protests in Dhaka led to the resignation of Prime Minister Sheikh Hasina. Accused of genocide, she fled to India. Bangladesh demands her return for trial. The international community watches closely.