দেশের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে পশ্চিমবঙ্গের চিকেন্স নেক (Indian Army) অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করল ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সন্ত্রাসবাদী (Indian Army) কার্যকলাপ রুখতে এবং জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এই অঞ্চলে UAV (Unmanned Aerial Vehicle) ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে। সেনার (Indian Army)এই পদক্ষেপ দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
চিকেন্স নেক, যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে, ভৌগলিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। মাত্র ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত এই করিডোরের মাধ্যমে ভারতীয় সেনার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হয়। এই কারণেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি বারবার এই অঞ্চলটিকে টার্গেট করে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশি জঙ্গিরা এই রুট ব্যবহার করে ভারতের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে থাকে।
সন্ত্রাসবাদীদের এই অবাধ বিচরণ রুখতে ভারতীয় সেনা হাসিমারা ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে অত্যাধুনিক UAV ড্রোন মোতায়েন করেছে। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, হেরন ড্রোন ও নতুন প্রযুক্তির নজরদারি ড্রোনগুলি সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে টহল দিচ্ছে। দিনরাত আকাশপথে এই ড্রোনগুলি নজরদারি চালাবে এবং প্রয়োজনে যে কোনও হামলা প্রতিরোধ করবে।
সম্প্রতি, বাংলাদেশ সীমান্তে ড্রোন মোতায়েনের খবর পাওয়ার পরই ভারতীয় সেনা তৎপর হয়ে ওঠে। মেঘালয় সীমান্তে বাংলাদেশের তেজগাঁও বিমানঘাঁটি থেকে নিয়ন্ত্রিত তুরস্কের TB-2 ড্রোনের সিগন্যাল পায় ভারতীয় সেনা। এর জবাবে ভারতও সীমান্তে তাদের নিজস্ব নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
চিকেন্স নেক রুট ধরে বহুদিন ধরেই জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঘটে চলেছে। সম্প্রতি ক্যানিং থেকে এক কাশ্মীরি জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার সূত্র ধরে জানা গিয়েছে যে বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল হয়ে ভারতে প্রবেশ করছে জঙ্গিরা। এর আগে কেরালায় জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির ঠিকানাও ছিল বাংলার মুর্শিদাবাদ।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক মনে করছে, চিকেন্স নেক অঞ্চলে নজরদারি জোরদার করতে পারলে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে। UAV ড্রোনগুলি দীর্ঘক্ষণ আকাশে উড়ে নজরদারি চালাতে সক্ষম এবং প্রয়োজনে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতেও সক্ষম। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে সীমান্ত সুরক্ষায় আরও এক ধাপ এগোল ভারতীয় সেনা।
সীমান্তে ড্রোন মোতায়েনের পাশাপাশি আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হবে। এই পদক্ষেপগুলি দেশের নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় করবে এবং জঙ্গি কার্যকলাপ রুখতে কার্যকরী হবে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।