দিল্লি পুলিশ বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। অভিযোগ, এদিন সংসদ চত্বরে ঘটে যাওয়া এক হাতাহাতির ঘটনার সঙ্গে রাহুল গান্ধীর সরাসরি যোগ রয়েছে। এই মামলা বিজেপি সংসদ সদস্যদের পক্ষ থেকে পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর নথিভুক্ত করা হয়েছে।
বিজেপি এমপিরা আহত, হাসপাতালে ভর্তি
ঘটনায় বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সারেঙ্গি এবং মুকেশ রাজপুত আহত হন। তাঁদের দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিজেপি অভিযোগ করেছে, এই ঘটনায় কংগ্রেস এবং লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী দায়ী। বিজেপি আরও দাবি করেছে যে, রাহুল গান্ধী বিরোধী দলনেতা হওয়ার যোগ্য নন।
এফআইআর: বিভিন্ন ধারায় মামলা
দিল্লি পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সঙ্কেত (BNS)-এর বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে রয়েছে:
১১৭ ধারা: স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত করা
১২৫ ধারা: অন্যের জীবন বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিপন্ন করা
১৩১ ধারা: অপরাধমূলক শক্তি প্রয়োগ
৩৫১ ধারা: অপরাধমূলক ভয় দেখানো
৩(৫) ধারা: সাধারণ উদ্দেশ্য
উভয় পক্ষের প্রতিনিধি দল আলাদাভাবে পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে।
কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ
কংগ্রেস বিজেপির অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, এটি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের একটি ষড়যন্ত্র, যার উদ্দেশ্য বিরোধীদের মনোযোগ বিভ্রান্ত করা। কংগ্রেস বলেছে, বিরোধীরা সংসদের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভ করছিল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিল। শাহের বাবাসাহেব আম্বেদকর সম্পর্কে মন্তব্যের কারণে বিরোধীরা প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। কংগ্রেস আরও দাবি করেছে, ঘটনায় তাদের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও আহত হয়েছেন।
শিবরাজ চৌহানের প্রতিক্রিয়া
বিজেপির সদর দফতরে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান অভিযোগ করেন, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে সংসদ চত্বরে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। চৌহান আরও বলেছেন, বিজেপি সাংসদ এস ফাংনন কনিয়ার প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে, তাতে দল ব্যথিত।
নাগাল্যান্ডের এমপির অভিযোগ
বিজেপির উপজাতি সাংসদ এস ফাংনন কনিয়া অভিযোগ করেন, রাহুল গান্ধী তাঁর কাছাকাছি এসে চিৎকার করেন, যা তাঁকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। কনিয়া বলেন, “সংসদের মকর দ্বারের বাইরে যখন বিক্ষোভ চলছিল, তখন রাহুল গান্ধী আমার খুব কাছে এসে এমন আচরণ করেন যা আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলে।”
ঘটনার প্রভাব ও রাজনৈতিক উত্তেজনা
এই ঘটনা সংসদ চত্বরে রাজনৈতিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিরোধীরা যেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছে, সেখানে বিজেপি এই ঘটনাকে বিরোধীদের আক্রমণ হিসেবে তুলে ধরছে।
ঘটনার তদন্ত চলছে। দিল্লি পুলিশ উভয় পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনা ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং আগামী দিনে এই বিষয়টি আরও বড় আকার নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।