তালালের পরিবর্তে অস্কার ব্রুজোর ভরসা এই ফুটবলার

ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC) সম্প্রতি খুবই কঠিন সময় পার করছে। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে বেশ কিছু আশা দেখিয়েছিল, কিন্তু আবার কিছু অপ্রত্যাশিত বিপত্তি তাদের পথ…

East Bengal FC coach Oscar Bruzon criticizes referee decisions

ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC) সম্প্রতি খুবই কঠিন সময় পার করছে। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে বেশ কিছু আশা দেখিয়েছিল, কিন্তু আবার কিছু অপ্রত্যাশিত বিপত্তি তাদের পথ চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে। আইএসএলে (ISL) টানা সাত ম্যাচে জয়হীন থাকার পর যখন তারা দুই ম্যাচে জয়ী হয়, তখন মনে হয়েছিল কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ময়দানের এই প্রধান। তবে ওডিশা এফসির (Odisha FC) কাছে গত ম্যাচে হেরে আবার সেই আশার আলো কিছুটা ফিকে হয়ে গেছে। ওই ম্যাচে প্রথম গোল করার পরও শেষ পর্যন্ত জয় অধরা হয়ে যায় এবং কিছু গুরুতর সমস্যা দেখা দেয় দলের মধ্যে। এরই মধ্যে আজ পাঞ্জাব এফসির (Punjab FC) বিরুদ্ধে মাঠে নামছে অস্কার ব্রুজোর (Oscar Bruzon) ছাত্ররা।

বর্তমানে দলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের চোট এবং শাস্তি ইস্টবেঙ্গলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অনুষ্ঠিত ওডিশা ম্যাচে, প্রথমার্ধের শেষ দিকে দলের ফরাসি মিডফিল্ডার মাদিহ তালাল গোড়ালিতে গুরুতর চোট পান এবং মাঠ ছাড়েন। এর সঙ্গে যোগ হয় দলের আরেক মিডফিল্ডার জিকসন সিংয়ের লাল কার্ড। এই দুই ঘটনা একসাথে ইস্টবেঙ্গলের পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে দিয়েছে। মঙ্গলবার, ইস্টবেঙ্গলকে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে একটি কঠিন ম্যাচ খেলতে হবে। যেখানে দলের শক্তি এবং ভারসাম্য অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ।

   

মাঝমাঠের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে গেছে, কারণ সাউল ক্রেসপোও হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের জন্য অন্তত দুসপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন। তালাল এবং জিকসনের অনুপস্থিতিতে কোচ অস্কার ব্রুজোর সামনে এখন বড় প্রশ্ন। মাঝমাঠের কোন খেলোয়াড়কে দাঁড় করানো হবে? সৌভিক চক্রবর্তীর সঙ্গে কে খেলবেন? মিডফিল্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আনোয়ার আলির নাম উঠে আসছে, তবে যদি আনোয়ারকে মাঝমাঠে খেলানো হয়, তবে রক্ষণে দায়িত্ব পালন করবে কে? এই প্রশ্নও সমাধান করতে ব্যস্ত লাল-হলুদের নব নিযুক্ত কোচ।

দলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল রক্ষণ। ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ বর্তমানে বেশ শক্তিশালী ছিল, বিশেষত স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হেক্টর ইউস্তের উপস্থিতি দলের জন্য শক্তির উৎস ছিল। গত তিন ম্যাচে গোল অক্ষত রাখা ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে বেশ আত্মবিশ্বাস ছিল। কিন্তু ইউস্তে গত দুই ম্যাচে চোটের কারণে মাঠে নামতে পারেননি। তবে কোচ ব্রুজো নিজেই জানিয়েছেন যে, ইউস্তে এই ম্যাচে খেলতে পারবেন, যা দলের রক্ষণকে অনেকটা স্বস্তি দেবে।

ইস্টবেঙ্গলের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল তাদের দলের ভারসাম্য ফিরে পাওয়া। অস্কার ব্রুজো যখন দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন মশাল ব্রিগেড প্রথম ছয় ম্যাচে সাত পয়েন্ট পেয়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিল। তবে চোট ও কার্ড সমস্যার কারণে দলটি ভারসাম্য হারাতে বসেছে। ইতিবাচক দিক হচ্ছে, ব্রুজোর অধীনে দলটি ক্রমশ সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছিল, যা ভবিষ্যতের জন্য আশার সঞ্চার করেছিল। কিন্তু ওডিশার বিরুদ্ধে দুর্ভাগ্যজনক হার তাদের সেই জয়ের ধারা ভেঙে দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, দলের ফরোয়ার্ডদের ওপর বেশি চাপ পড়ছে। কোচের জন্য একটি বড় প্রশ্ন হল, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে খেলতে সক্ষম কিনা। তাঁর মাঠে নামার সম্ভাবনা সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। তাছাড়া, মাদিহ তালালও এখন চোটের কারণে মাঠের বাইরে আছেন এবং তাঁর কখন ফিরবেন তা নিশ্চিত নয়। তালালের অনুপস্থিতি দলের আক্রমণাত্মক শক্তি কমিয়ে দিয়েছে, কারণ তিনি ইতিমধ্যে এক গোল এবং এক অ্যাসিস্ট করেছেন।

এভাবে যদি চোট এবং শাস্তির সমস্যাগুলো চলতেই থাকে, তবে ইস্টবেঙ্গলের জন্য সেরা ছয়ে থাকার লক্ষ্যে কঠিন পথ বেয়ে যেতে হবে। তবে কোচ ব্রুজো এবং দলের অন্যান্য সদস্যদের সাহস এবং পেশাদারিত্ব যদি বজায় থাকে, তবে তারা এই কঠিন সময়ের মধ্যে থেকে উঠে আসতে পারবে। টানা কয়েকটি ম্যাচে জয় পেলে আবার শীর্ষ ছয়ে উঠে আসার আশা বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের যে সমর্থন এবং পুনর্গঠন প্রয়োজন, তা নিশ্চিতভাবেই সমাধান করতে হবে খুব দ্রুত।