আজ লোকসভায় ‘একটি জাতি, একটি নির্বাচন’(One Nation, One Election) সম্পর্কিত বিল পেশ করা হবে, যার ফলে লোকসভা ও রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিধানসভার নির্বাচনের জন্য একযোগভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ প্রসঙ্গে, কংগ্রেস এবং শিব সেনা মঙ্গলবার তাদের লোকসভা সাংসদদের (One Nation, One Election)জন্য উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হুইপ জারি করেছে। কংগ্রেস একটি তিনটি লাইন বিশিষ্ট হুইপ জারি করেছে, যার মাধ্যমে তাদের সকল সাংসদকে “গুরুতর কার্যক্রম” উপলক্ষে সংসদে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।(One Nation, One Election)
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, আজ সকাল ১০.৩০ মিনিটে তারা একটি মিটিং(One Nation, One Election)করবে, যেখানে দলের সাংসদরা সংসদে দিনের কাজ নিয়ে আলোচনা করবেন। কংগ্রেস পার্লামেন্টারি পার্টি (সিপিপি) অফিসে অনুষ্ঠিত এই সভায়, দলের সাংসদরা প্রস্তাবিত বিলের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন, এবং সংসদে যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে তার জন্য প্রস্তুতি নেবেন।
এদিকে, শিব সেনা, যার নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে রয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকেও এক বিশেষ হুইপ জারি করা হয়েছে। শিব সেনা দলের হুইপ শ্রীরঙ্গ বারনে জানিয়েছেন, সংসদে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আইনগত বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, যা “এখনই পাস করা প্রয়োজন”। শিব সেনা বর্তমানে বিজেপির সহযোদ্ধা, এবং তাদের উদ্দেশ্য হল এই বিলের আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন করা।
সংবিধান (একশ একাশি তম সংশোধনী) বিল, ২০২৪, যা ‘একটি জাতি, একটি নির্বাচন’ বিল নামে পরিচিত, আজ লোকসভায় ভারতের আইনমন্ত্রী অরুণ রাম মেঘওয়াল পেশ করবেন। তিনি লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লাকে অনুরোধ করবেন যে, বিলটি সংসদের যৌথ কমিটির কাছে পাঠানো হোক যাতে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে। এই যৌথ কমিটি সাংসদদের সংখ্যা অনুযায়ী গঠন করা হবে, এবং কমিটির চেয়ারম্যানের পদটি হবে বিজেপির। এর মাধ্যমে, বিলের বিভিন্ন দিক নিয়ে বৈঠক করা হবে, এবং বিলটি কীভাবে প্রয়োগ করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই বিলের মাধ্যমে, ভারতের আইনপ্রণেতারা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাচনগুলির মধ্যে সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করতে চান। এই বিলটি দেশে একযোগী নির্বাচন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ, যা দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত হচ্ছে। ভারতীয় নির্বাচন ব্যবস্থা একটি জটিল প্রক্রিয়া, যেখানে পৃথকভাবে লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন হয়। তবে, একযোগী নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত খরচ কমানোর এবং কার্যকারিতা বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে।
সর্বশেষ, ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা এই সংশোধনী বিলটি অনুমোদন করেছে, এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাচনগুলি একসাথে করার প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিলটির মাধ্যমে, সেন্ট্রাল আইন ও রাজ্য আইনের মধ্যে সমন্বয় করা হবে এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চলগুলির নির্বাচন একত্রিত করা হবে। এই বিলের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর, পুদুচেরি এবং দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির নির্বাচন একসঙ্গে করা হবে।
একটি জাতি, একটি নির্বাচন প্রকল্পের লক্ষ্য দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত এবং কার্যকরী করা। একযোগী নির্বাচন ব্যবস্থা একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে, যা ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।
যদিও এই বিলটি সরকার এবং শিব সেনার পক্ষ থেকে সমর্থিত হচ্ছে, তবে কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি এটি নিয়ে বেশ কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, একযোগী নির্বাচন পদ্ধতি কিছু ক্ষেত্রে সাংবিধানিকভাবে জটিলতা তৈরি করতে পারে এবং এর ফলে রাজ্য নির্বাচনগুলির উপর কেন্দ্রের প্রভাব বৃদ্ধি হতে পারে। তবে, সরকারের দাবি যে এটি নির্বাচনী ব্যয় কমাতে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকরী করতে সাহায্য করবে।
এই বিলের ওপর আলোচনার জন্য সংসদে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, এবং সকল দলের পক্ষ থেকে তার সাংসদদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। ভারতীয় সংসদে আজকের দিনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে চলেছে, কারণ এটি দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করতে পারে।