ইজরায়েল (Earthquake Bomb)গত ১৫ ডিসেম্বর সিরিয়ার উপরে তার ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা হামলা (Earthquake Bom) চালিয়েছে, যা ২০১২ সালের পর সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমণ (Earthquake Bomb) বলে দাবি করছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR)। এই হামলা এতটাই তীব্র ছিল যে এটি একটি ৩.১ মাত্রার ভূমিকম্পের মতো অনুভূত হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে সিরিয়ার তর্তুস শহরের কাছাকাছি একটি বিশাল মাশরুম ক্লাউডের মত আগুনের গোলা ফুটে ওঠা দেখা গেছে।
সিরিয়ায় এই বোমা বিস্ফোরণটি (Earthquake Bomb) এতটা শক্তিশালী ছিল যে এটি স্থানীয় সিসমিক সেন্সরে ৩.১ মাত্রার ভূমিকম্প হিসেবে রেজিস্টার হয়েছে। ইজরায়েলি বোমার আঘাতের পর তা ভ্রমণ করেছে ৮২০ কিলোমিটার দূরের তুরস্কের ইজনিক শহরের ম্যাগনেটোমিটার স্টেশনে, এবং সিগনালটি ১২ মিনিটে পৌঁছায়, যা সাধারণ ভূমিকম্প সিগনালের তুলনায় দ্বিগুণ দ্রুত।
এই হামলার লক্ষ্য ছিল সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থানরত সামরিক স্থাপনাগুলি, বিশেষত আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট, স্যাটেলাইট মিসাইল ডিপো এবং অন্যান্য সামরিক গুদামগুলো। ইসরায়েলের বিমান বাহিনী হামলা চালিয়েছিল হামার ১০৭তম ব্যারাক এবং তর্তুস গ্রামীণ এলাকায় অস্ত্রের গুদামে। তবে, সৌভাগ্যবশত, এ হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, “এগুলি সিরিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে ২০১২ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমণ।” সিরিয়ার উপকূলের এই হামলাগুলি ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের আক্রমণের একটি নতুন অধ্যায় হিসাবে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, তিনি বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন যাতে তারা গলান হাইটসের সীমান্তে অবস্থিত জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ অঞ্চলে শীতকালীন পরিস্থিতিতেও অবস্থান করতে পারে। এটি সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির প্রতি ইসরায়েলের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
এই আক্রমণের সাথে সম্পর্কিত কিছু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যে ইজরায়েলর বাহিনী দক্ষিণ লেবানন থেকে ফিরে আসার পর গাজা যুদ্ধের পাশাপাশি সিরিয়ায় এই হামলা চালিয়ে একটি কৌশলগত অবস্থান নিতে চাইছে। এটি পুরো অঞ্চলটির মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনী হিজবুল্লাহর সাথে মাসব্যাপী যুদ্ধ শেষে বর্তমানে গাজার হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক রিচার্ড কোরদারো বলেন, “এই বিস্ফোরণের সিগন্যাল দুটি গুণ দ্রুত ভূমিকম্প সিগন্যালের তুলনায় পৌঁছায়, যা এটি একটি অনন্য ঘটনা তৈরি করেছে।” এছাড়াও, SOHR উল্লেখ করেছে যে ইজরায়েলি বিমান বাহিনী আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট, মিসাইল ডিপো এবং অন্যান্য সামরিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালানোর জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে এই আক্রমণ চালিয়েছে।
সিরিয়া এবং ইজরায়েলের সম্পর্কের এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যেখানে একাধিকবার আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই নতুন আক্রমণ সিরিয়ার সরকারের পতনের পর আরও বড় আকার ধারণ করেছে, যেখানে ইসরায়েল তাদের সীমান্ত নিরাপত্তা এবং প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে।