মহাকাশের পর এবার সমুদ্রগর্ভে, ভারত মহাসাগরের গভীরে অভিযানে NIOT

মহাকাশের পর এবার সমুদ্রের অতলে অভিযানে ভারত (India)। ভারতীয জাতীয় সামুদ্রিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান (National Institute of Ocean Technology) বা NIOT এবং জাতীয় মেরু এবং সামুদ্রিক…

Indian ocean research and discovery programme launched by NIOT

মহাকাশের পর এবার সমুদ্রের অতলে অভিযানে ভারত (India)। ভারতীয জাতীয় সামুদ্রিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান (National Institute of Ocean Technology) বা NIOT এবং জাতীয় মেরু এবং সামুদ্রিক গবেষণা কেন্দ্র (NCPOR)-এর বিজ্ঞানীদের একটি দল সফলভাবে উচ্চ-রেজোলিউশন গভীর সাগর অনুসন্ধান এবং চিত্রগ্রহণ করেছে, যা একটি হাইড্রোথার্মাল সালফাইড ক্ষেত্রের উপর পরিচালিত হয়েছে।    

ভারতে ফিরে হুঙ্কার চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ

   

এই গভীর সাগর ক্ষেত্রটি ভারত মহাসাগরের (Indian Ocean) দক্ষিণাঞ্চলে, কেন্দ্রীয় এবং দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতীয় রিজে প্রায় ৪,৫০০ মিটার গভীরতায় অবস্থিত। এই গবেষণাটি সাগরের গভীরে এক অনন্য জীববৈচিত্র্য এবং ভূতাত্ত্বিক গঠন সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। হাইড্রোথার্মাল সালফাইড ক্ষেত্রগুলি পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় এবং অত্যন্ত উষ্ণ পরিবেশগুলির মধ্যে একটি, যেখানে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ তাপ থেকে সৃষ্ট গরম জল এবং রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। এই ধরনের অঞ্চলে অদ্ভুত জীবজগতের উদ্ভব ঘটে, যা সাধারণভাবে আমাদের পরিচিত পরিবেশের বাইরে থাকে।

গবেষণার সময়, বিজ্ঞানীরা উচ্চ-রেজোলিউশন ভিডিও ক্যামেরা এবং সাইন্স ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করে সাগরের তলদেশের গভীরতা এবং তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য চিত্রিত করেন। এই ধরনের প্রযুক্তির মাধ্যমে গবেষকরা সাগরের গভীরে থাকা তাপীয় উদ্দীপক সালফাইড স্তম্ভ এবং তার আশপাশের জীববৈচিত্র্য দেখতে সক্ষম হন। এখানে জীবাণু, অগভীর হাইড্রোথার্মাল সিস্টেম এবং অন্যান্য বিশেষ ধরণের জীবজন্তু পাওয়া যায়, যেগুলি তাপীয় শর্তে টিকে থাকতে সক্ষম। এই সকল গবেষণার ফলাফলগুলি বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নতুন ধরনের প্রাণী এবং জীবজগতের মধ্যে সম্পর্ক এবং তাদের অস্তিত্বের টেকসই প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করবে।

আধুনিকীকরণ জন্য আদ্রা ডিভিশনে ট্রেন পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ, বিজ্ঞপ্তি রেলের

গবেষণাটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে অবস্থিত অনন্য জীববৈচিত্র্য এবং ভূতাত্ত্বিক কাঠামোর দিকে আলোকপাত করেছে। এই এলাকায় আরো অনেক অজানা জীবাণু এবং প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেগুলি পৃথিবী এবং মহাসাগরের পরিবেশ সম্পর্কে আমাদের ধারণা বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে এই গবেষণা ভবিষ্যতে পরিবেশগত পরিবর্তন এবং পৃথিবীর জলবায়ু সম্পর্কে গভীরতর বোঝাপড়া প্রদান করবে।

এই প্রকল্পটির মাধ্যমে, ভারতীয় বিজ্ঞানীরা একধাপ এগিয়ে গেছেন আন্তর্জাতিক গভীর সাগর অনুসন্ধানে এবং এটি ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় অর্জন হিসেবে গণ্য হচ্ছে। NIOT এবং NCPOR-এর উদ্যোগের মাধ্যমে এ ধরনের গবেষণা ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করাবে, যা ভবিষ্যতে বৈশ্বিক পর্যায়ে মহাসাগর গবেষণায় নেতৃত্ব দিতে সহায়ক হবে।

এছাড়াও, এই ধরনের গবেষণা আমাদের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে, যা পরিবেশগত সংকট মোকাবিলা এবং মহাসাগরের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ।