লালগোলায় আইনজীবী হত্যার ঘটনায়, অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতাকে তিনদিনের জেল হেফাজত

মুর্শিদাবাদের লালগোলা (Lalgola) ব্লক যুব (youth) তৃণমূল (TMC) সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহকে আইনজীবী (lawyer) মারধর ও খুনের (murder) চেষ্টার (attempt) অভিযোগে আদালত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে। শুক্রবার…

arrested TMC MLAs assistant

মুর্শিদাবাদের লালগোলা (Lalgola) ব্লক যুব (youth) তৃণমূল (TMC) সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহকে আইনজীবী (lawyer) মারধর ও খুনের (murder) চেষ্টার (attempt) অভিযোগে আদালত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে। শুক্রবার লালবাগ মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিনের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু আদালত তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করে তিন দিনের (three day) জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

ঘটনাটি ঘটেছিল ২৯ নভেম্বর, যখন লালগোলা (Lalgola) থানার বাহাদুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দামোদরপুর গ্রামের বাসিন্দা আইনজীবী নুর মহম্মদ সেলিম আদালতের কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে কৃষ্ণপুর গ্রামীণ হাসপাতালের গেটের সামনে চা খাচ্ছিলেন। ওই সময় ফারুক আবদুল্লাহ এবং তাঁর সঙ্গীরা আইনজীবী নুর মহম্মদ সেলিমের উপর চড়াও হন। অভিযোগ, তাঁকে মারধর করার পর শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করা হয়। তবে হামলার পেছনে কী কারণ ছিল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি।

   

আক্রান্ত আইনজীবী নুর মহম্মদ সেলিম পরে লালগোলা (Lalgola) থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, যুব তৃণমূল নেতা ফারুক আবদুল্লাহ, জহিরুল ইসলাম এবং তাজিরুলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছিলেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং প্রথমে তাজিরুলকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ফারুক এবং জহিরুল ইসলাম পালিয়ে যান। এরপর শুক্রবার ফারুক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু লালবাগ মহকুমা আদালতের বিচারক তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে তিন দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। বিচারক পুলিশকে দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

আইনজীবী নুর মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আমি ঘটনার পর থেকে উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছি এবং আমি নিশ্চিত যে, অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এটা আমাদের ন্যায্য অধিকার এবং আমি সঠিক বিচারের জন্য শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।’’

এদিকে, তৃণমূলের লালগোলা ব্লক সভাপতি মোতাহার হোসেন রিপন বলেন, ‘‘ফারুকের জেল হেফাজতের খবর শুনেছি। তবে আমি বিস্তারিত জানি না। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে চেষ্টা করব।’’

এছাড়া, ওই ঘটনার পর ফারুক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠজন অসিফ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, অসিফ খান ওই আইনজীবীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিয়েছিলেন। এর ফলে অসিফ খানকেও জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।

এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনার সৃষ্টি করেছে। আইনজীবী মারধর এবং খুনের চেষ্টা করার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে আতঙ্ক এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা এই ঘটনাকে রাজনৈতিক অস্থিরতার অংশ হিসেবে দেখছেন। তবে রাজনৈতিক বিরোধীরা এ ঘটনায় যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন এবং দাবি করেছেন, দলীয় নেতা ফারুক আবদুল্লাহকে দ্রুত শাস্তি দেওয়া উচিত।

এই ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আরও সতর্ক হয়েছে এবং তদন্তে দ্রুত গতিতে কাজ শুরু করেছে। ফারুকের জামিনের আবেদন খারিজ করার পর পুলিশকে দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা এই মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এমন একটি ঘটনায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাজনৈতিক হানাহানি এবং শক্তি প্রদর্শনের কারণে সাধারণ মানুষ এখন বিপদে পড়ছেন। তারা আশা করছেন, পুলিশ প্রশাসন এই ধরনের ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এদিকে, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা পুরোপুরি তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।