বৃহস্পতিবার লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) করেছে তলব করেছে লখনউ আদালত (Lucknow Court)। যা তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়াত বীর সাভারকার সম্পর্কে করা অভিযোগপূর্ণ মন্তব্যের কারণে দায়ের করা হয়েছে।
এটি সেই মামলার অংশ, যা ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার সময় সাভারকার সম্পর্কে করা মন্তব্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়। রাহুল গান্ধী সাভারকারকে “ব্রিটিশ দাস” এবং “ব্রিটিশ সরকার থেকে পেনশন গ্রহণকারী” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, যা অনেকের কাছেই চরম বিতর্কের সৃষ্টি করে। গান্ধীর এই মন্তব্যটি সাভারকারের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং তারা দাবি করেন যে, এটি সাভারকারের মর্যাদাকে অপমানিত করেছে।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এই মানহানির মামলা তার ওই মন্তব্যের পর সাভারকারের নাতি রানা সাভারকারের নেতৃত্বে দায়ের করা হয়। মামলার অভিযোগ, গান্ধী সাভারকারের সম্মানহানি করেছেন, যিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। সাভারকারের প্রতি এই ধরনের অপমানজনক মন্তব্য ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের কাছে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং অসম্মানজনক বলে মনে করা হয়।
লখনউ আদালত এই মামলায় রাহুল গান্ধীকে সsummon করে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের এই নির্দেশের পর রাহুল গান্ধী বলেছেন যে, তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আদালতে গিয়ে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। তিনি আরও বলেন, তাঁর মন্তব্যগুলি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ছিল এবং সেগুলি ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার অংশ।
এদিকে, এই মামলার পরে ভারতীয় রাজনীতি ও আইনি ক্ষেত্রে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাহুল গান্ধীর সমর্থকরা দাবি করছেন যে, সাভারকারের ইতিহাসের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করা তাঁর সাংবিধানিক অধিকার, আর কিছুতেই তা মানহানির পর্যায়ে পড়বে না। অন্যদিকে, সাভারকারের সমর্থকরা দাবি করছেন যে, রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ইতিহাসের বিকৃতি এবং সাভারকারের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মামলাটি ভারতের রাজনৈতিক পরিবেশে আরও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে, কারণ এটি বর্তমান সরকার এবং বিরোধী দলের মধ্যে সম্পর্কের একটি নতুন দৃষ্টান্ত হতে পারে। বিরোধী দলগুলো মনে করছে, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মামলা একটি রাজনৈতিক প্রতিশোধের অংশ হতে পারে, যা নির্বাচনী বছরে বিরোধী দলের নেতাদের দুর্বল করার চেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে।
এভাবে, এই মামলার পরিণতি শুধু রাহুল গান্ধীর জন্যই নয়, বরং ভারতের রাজনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে চলেছে, যা দেশের মুক্তচিন্তা এবং রাজনৈতিক ভাষার ওপর নতুন আলো ফেলবে।