Reporters Without Borders: চলতি বছরে ৫৪ সাংবাদিককে হত্যা করেছে ইজরায়েল, পাকিস্তান, তালিকায় বাংলাদেশও

চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ এবং সংঘাতের পরিস্থিতিতে কর্মরত ৫৪ জন সাংবাদিক (Journalist killed) নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি (AFP)-এর…

Maximum number of Reporters in this year killed by Israel, Pakistan and Bangladesh claims by Reporters without Borders

চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধ এবং সংঘাতের পরিস্থিতিতে কর্মরত ৫৪ জন সাংবাদিক (Journalist killed) নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি (AFP)-এর এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই ৫৪ জন সাংবাদিকের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশই নিহত হয়েছেন ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে। এ ধরনের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক অধিকার রক্ষাকারী সংগঠন ‘রিপোর্টার্স উইথাউট বর্ডারস’ (Reporters Without Borders) বা আরএসএফ-এর বরাতে। সংগঠনটি জানিয়েছে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই ৫৪ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ইজ়রায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৮ সাংবাদিকের মধ্যে ১৬ জনই গাজায় এবং ২ জন লেবাননে নিহত হয়েছেন। 

গ্রিন কার্ড কিউতে ভারতীয়দের অগ্রগতি, ইউএস ভিসা বুলেটিনে বড়সড় সুখবর

   

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বরাবরই চ্যালেঞ্জের মুখে থাকে। তবে গত বছরগুলোর তুলনায় ২০২৪ সালের প্রথম দিকের ঘটনাগুলি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা যখনই যুদ্ধ ও সংঘাতের অঞ্চলে প্রবেশ করেন, তাঁদের জীবন বিপদের মুখে পড়ে। বিশেষ করে গাজা, ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, এবং ইয়েমেনের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলগুলোতে সাংবাদিকদের মৃত্যুর সংখ্যা অত্যন্ত উচ্চ। গত কয়েক বছরে, বিশেষত ইজ়রায়েলি বাহিনীর আক্রমণগুলোর মধ্যে গাজা অঞ্চলে সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ আরও বেড়ে গেছে।

সাংবাদিকদের হত্যা নিয়ে রিপোর্টার্স উইথাউট বর্ডারস-এ এক নিন্দনীয় পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর আক্রমণে ১৮ সাংবাদিকের মৃত্যু এটি প্রমাণ করে যে, সাংবাদিকরা যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করার সময় শুধু শত্রুপক্ষের নয়, বরং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এসব আক্রমণ শুধু সাংবাদিকদের মৃত্যুতেই সীমাবদ্ধ নয়, তাদের কর্মস্থলে তথ্য সংগ্রহ করার স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এ ধরনের হামলার কারণে স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং যুদ্ধের মতো গুরুতর পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ছে।

১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা

গাজার পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। ২০২৪ সালের অক্টোবরের শেষ থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের মধ্যে বহু সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই আরব মিডিয়ার কর্মী। যুদ্ধকালীন প্রতিবেদনে গাজার জনগণের অবস্থা ও ইজ়রায়েলি বাহিনীর আক্রমণের বিবরণ সংগ্রহের সময় একাধিক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ইজ়রায়েলি বাহিনীর অস্ত্রশস্ত্রের শিকার হয়ে সাংবাদিকদের প্রাণহানির ঘটনাগুলি আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে, এবং বিশ্বব্যাপী এই আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদও উঠেছে। যদিও ইজ়রায়েলি সরকার দাবি করছে, তারা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা করেনি, তবুও অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা এ অভিযোগ তুলে ধরেছে যে, সাংবাদিকদের হত্যাকাণ্ডগুলি উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংঘটিত হয়েছে।

লেবাননে, যেখানে সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং ইজ়রায়েলি বাহিনীর হামলা চলছে, সেখানেও দুইজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। যদিও সেখানে সংঘাতের পরিমাণ গাজার মতো তীব্র নয়, কিন্তু একই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যেখানে সাংবাদিকরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছেন।

সাংবাদিকদের এই ধরনের আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ড সারা বিশ্বে স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকতার প্রতি আক্রমণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সাংবাদিকরা যখন এমন পরিস্থিতিতে কাজ করেন, তখন তাদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। সাংবাদিকদের হত্যা করা মানে শুধু তাঁদের ব্যক্তিগত অধিকার লঙ্ঘন করা নয়, এটি সংবাদ পরিবেশনে স্বাধীনতার উপরও আঘাত। যুদ্ধের মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা গণতন্ত্রের পরিপন্থী এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হয়।

নদী সাঁতরে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা বাংলাদেশি যুবকের, আটক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিশেষত রাষ্ট্রগুলোর উচিত সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং তাদের হত্যাকাণ্ডের দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করার মাধ্যমে যুদ্ধ ও সংঘাতের সময়ে তথ্য পরিবেশনকারী এসব মুক্তচিন্তকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। এর মাধ্যমে মানবাধিকার, সাংবাদিকতা এবং তথ্যের স্বাধীনতা সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে।