ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরসের (George Soros) বিরুদ্ধে অভিযোগ। কংগ্রেস (Congeress) দাবি করেছে যে, সোরস ভারতের ভিতরে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন এবং কংগ্রেসকে মদত দেওয়ার মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টির চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা সংসদে দাঁড়িয়ে সোরসের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন, কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রশ্ন তোলা হয়েছে— কেন মোদী (Narendra Modi) সরকার এই বিষয়টি নিয়ে কোনও তদন্ত করছে না এবং কেন সোরসের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।
ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগে ‘সুপ্রিম’ শরণের পরিকল্পনা ইন্ডি জোটের
কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল— যদি সোরস ভারতে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন, তাহলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না? কেন ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে সোরসের ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলিকে বন্ধ করা হচ্ছে না, এবং কেন তাঁর মদতপুষ্ট তহবিলগুলোকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না? কংগ্রেসের অভিযোগ, সোরসের ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন’ রাষ্ট্রপুঞ্জের তহবিল থেকে টাকা পাচ্ছে, যেখানে ভারতের সরকার অর্থ বিনিয়োগ করছে।
এছাড়া, কংগ্রেসের প্রশ্ন আরও গভীর হয়ে দাঁড়ায়, যেখানে তাঁরা তুলে ধরেছেন যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শমিকা রবিসোরসের ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন’ থেকে অনুদান পেয়ে থাকেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী কি শমিকা রবিকে পদ থেকে সরিয়ে দেবেন, নাকি তার বিরুদ্ধে ভারতে অস্থিরতা তৈরির অভিযোগে তদন্ত করবেন?
কংগ্রেসের এই প্রশ্নগুলোর পেছনে একটি বড় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে— তারা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে, বিশেষত যখন বিষয়টি জর্জ সোরসের বিরুদ্ধে অভিযোগের দিকে নির্দেশিত। কংগ্রেসের মতে, ভারত সরকারের এই চুপ থাকার নীতি দেশবাসীর কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। তারা দাবি করছে, যদি সোরস আসলেই ভারত-বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন, তাহলে সরকারের উচিত তাকে সমর্থন না করা এবং তার তহবিলের উপর কড়াকড়ি আরোপ করা।
এই পরিস্থিতি এমন একটি সময়ে ঘটছে যখন ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্ক একেবারে তুঙ্গে পৌঁছেছে। সোরসের মতো একজন ধনী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তৈরি হওয়া এবং কংগ্রেসের প্রশ্ন তোলার পরিপ্রেক্ষিতে, বিজেপি সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে।
আগরতলায় বাংলাদেশের দূতাবাসে হিন্দুত্ববাদী হামলায় আমেরিকার বিশেষ বার্তা পেল মোদী সরকার
বিজেপি অবশ্য এ বিষয়ে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে তাদের পক্ষ থেকে সোরসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলি উত্থাপন করা হচ্ছে, তা ভারতের রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য মোদী সরকারকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ডেরেকের ফোন গেল সুখেন্দুর কাছে, অনুঘটক কুণাল
এদিকে, ভারতের জনগণও এই বিষয়টি নিয়ে উত্তেজিত। তারা জানতে চায়, যে সরকার আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিভিন্ন বিষয়ে মুখ খুলছে, সেই সরকার কেন নিজেদের দেশে সোরসের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তবে, রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বিতর্কের শেষ কোথায় হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।