ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগে ‘সুপ্রিম’ শরণের পরিকল্পনা ইন্ডি জোটের

সম্প্রতি মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিরোধী ইন্ডি জোট ব্লক সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং…

INDIA Bloc EVM Manipulation in Maharashtra Elections

সম্প্রতি মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিরোধী ইন্ডি জোট ব্লক সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা শরদ পাওয়ারের মধ্যে একটি বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

বিরোধীদের পরাজয় ও ইভিএম বিতর্ক
সূত্রের মতে, মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপি ও বিরোধী জোট ব্যাপক পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, আসন্ন দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে পরিকল্পনা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রে বিরোধীরা দাবি করছে, ইভিএম-এ কারচুপি করা হয়েছে এবং এর ফলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযূতি সুবিধা পেয়েছে।

   

শরদ পাওয়ারের দলের অবস্থান
এনসিপি-শরদ পাওয়ার শাখার নেতা প্রশান্ত জগতাপ, যিনি পুনের হাদাপসর কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন, আজকের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানান যে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

ইভিএম-এর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়
তবে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন সময়ে ইভিএম-এর গ্রহণযোগ্যতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করেছে। সম্প্রতি একটি মামলায়, আদালত ইভিএম বিরোধী আবেদনকারীদের কটাক্ষ করে বলেছে, “আপনারা জিতলে ইভিএম ঠিক থাকে, আর হারলেই জালিয়াতির অভিযোগ করেন?”

আদালত ইভিএম-এর সুবিধাগুলি তুলে ধরে বলেছে, “ইভিএম বুথ দখল রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়াও, এটি অবৈধ ভোট এবং গণনা সংক্রান্ত সমস্যাগুলি দূর করতে সক্ষম হয়েছে।”

ভিভিপ্যাট প্রযুক্তি ও নির্বাচন কমিশনের প্রতিক্রিয়া
ইভিএম-এর সাথে সংযুক্ত ভিভিপ্যাট (ভোটার ভেরিফাইড পেপার অডিট ট্রেল) স্লিপ ব্যবহার করে ভোট যাচাই করা যায়। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে তারা ভিভিপ্যাট এবং ইভিএম-এর মধ্যে কোনো অসামঞ্জস্য খুঁজে পায়নি।

মহারাষ্ট্র নির্বাচনের ফলাফল
গত মাসে অনুষ্ঠিত মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহাযূতি ২৮৮টি আসনের মধ্যে ২৩৫টি আসনে জয়ী হয়েছে। বিপরীতে, বিরোধী জোট মহা বিকাশ আগাড়ি মাত্র ৪৬টি আসন দখল করতে পেরেছে।

অভিযোগ ও পরবর্তী পদক্ষেপ
বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে ইভিএম জালিয়াতির কারণে বিজেপি এই বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে। আজকের বৈঠকে কংগ্রেস নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি এবং শরদ পাওয়ারের দলের পরাজিত প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

দিল্লির আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও ইভিএম বিতর্ক বড় বিষয় হয়ে উঠতে পারে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল গত দুই নির্বাচনে জয়লাভ করলেও, এবার বিজেপি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এনে কেজরিওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি
ইন্ডিয়া ব্লকের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, ইভিএম জালিয়াতির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার জন্য তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই মামলাটি ভারতীয় রাজনীতিতে ইভিএম ব্যবহারের গ্রহণযোগ্যতা ও কার্যকারিতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

ইভিএম বিতর্ক নতুন নয়, তবে প্রতিবার এই বিতর্ক ভোট ব্যবস্থার স্বচ্ছতার উপর প্রশ্ন তোলে। ইন্ডিয়া ব্লক যদি সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা নিয়ে এগিয়ে যায়, তবে এটি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং প্রযুক্তিগত মান সম্পর্কে একটি নতুন আলোচনার দরজা খুলে দিতে পারে।

The INDIA Bloc is set to approach the Supreme Court, alleging EVM manipulation in Maharashtra elections. Sharad Pawar and Arvind Kejriwal led a meeting to strategize, claiming BJP’s unfair advantage.