বাংলা পেল ২ বিশ্ববিদ্যালয়, বিধানসভার অধিবেশনে পাশ হল দুই বিল

পশ্চিমবঙ্গ (Bengal) বিধানসভায় (Legislative Assembly) একদিনে দুটি (Two) গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের (University) বিল (Bills) পাশ হলো। মঙ্গলবার, ২০২৪ সালে ‘দ্য রবীন্দ্রনাথ টেগোর ইউনিভার্সিটি বিল’ এবং…

পশ্চিমবঙ্গ (Bengal) বিধানসভায় (Legislative Assembly) একদিনে দুটি (Two) গুরুত্বপূর্ণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের (University) বিল (Bills) পাশ হলো। মঙ্গলবার, ২০২৪ সালে ‘দ্য রবীন্দ্রনাথ টেগোর ইউনিভার্সিটি বিল’ এবং ‘রামকৃষ্ণ পরমহংস ইউনিভার্সিটি বিল’ পেশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। দুটি বিলই আলোচনার মাধ্যমে পাশ হয়েছে এবং এগুলি রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই দুটি বিল নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ বেশ কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব করেন। তিনি মোট ৬৪টি সংশোধনী আনে, যার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামের পরিবর্তে ‘টেগোর’ শব্দটি ব্যবহার না করার। শঙ্কর ঘোষের যুক্তি ছিল যে, কিছুদিন আগে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, এবং সেই অনুযায়ী ‘রবীন্দ্রনাথ টেগোর’ নামের পরিবর্তে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’ ব্যবহার করা উচিত। তাঁর মতে, ‘টেগোর’ শব্দটি একটি উপনিবেশিক ধারণা প্রকাশ করে, যা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

   

এই প্রস্তাবের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘‘টেগোরের জায়গায় ঠাকুর নামটি ব্যবহার করার প্রস্তাবটি আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জানাবো।’’ ফলে এই বিলের সংশোধনী সম্পর্কে আরও আলোচনা হতে পারে। যদিও, প্রাথমিকভাবে এই সংশোধনীটি পাশ হয়নি, তবে এটি ভবিষ্যতে আরও আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

‘রামকৃষ্ণ পরমহংস ইউনিভার্সিটি’টি চালু হবে আগামী বছর জুলাই মাসে, উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ায়। এটি পরিচালনা করবে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন। রামকৃষ্ণ মিশনের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ, ২০১৮ সালে শিক্ষা দফতর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।

অন্যদিকে, ‘দ্য রবীন্দ্রনাথ টেগোর ইউনিভার্সিটি বিল’ও পাশ হয়েছে, যা হুগলি জেলার ধনেখালিতে স্থাপিত হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে কালিপদ সাহা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট। রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশনের সন্ন্যাসীরা বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন এই দুই বিল পাশের পর রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘এটি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।’’ এর পাশাপাশি, তিনি আরও জানান যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি দেশ ও রাজ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিল পাশের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন দিকের সূচনা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং রাজ্যের সামগ্রিক উন্নতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।