রাজনীতি জগতে শোকের ছায়া, প্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ

ভারতের প্রাক্তন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ(SM Krishna) ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী (SM Krishna) হিসেবে ১৯৯৯ থেকে…

SM Krishna, former Karnataka CM, passes away

ভারতের প্রাক্তন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ(SM Krishna) ৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। তিনি কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী (SM Krishna) হিসেবে ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন এবং বেঙ্গালুরু শহরকে ভারতের সিলিকন ভ্যালি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। পরিবারের সূত্রে জানানো হয়, এস এম কৃষ্ণ (SM Krishna)  সোমবার রাত ২:৪৫ মিনিটে তার বাড়িতে মারা যান। তার মৃতদেহ সম্ভবত আজ মাদ্দুরে নিয়ে যাওয়া হবে।

   

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক পোস্টে এস এম কৃষ্ণের (SM Krishna) প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “শ্রী এস এম কৃষ্ণজি (SM Krishna) ছিলেন এক অসাধারণ নেতা, যাকে সব শ্রেণির মানুষ গভীর শ্রদ্ধা করতেন। তিনি মানুষের জীবনের উন্নতির জন্য অবিরাম কাজ করেছেন।

বিশেষ করে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী(SM Krishna) হিসেবে তার ভূমিকা অত্যন্ত স্মরণীয়, যেখানে তিনি অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি একজন গুণী পাঠক এবং চিন্তাবিদ ছিলেন। আমি বহুবার শ্রী এস এম কৃষ্ণজির (SM Krishna) সঙ্গে আলাপ করার সুযোগ পেয়েছি, এবং আমি সবসময় সেই আলোচনাগুলো মনে রাখব। তার প্রয়াণে আমি গভীর শোকিত। তার পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি সমবেদনা জানাই। ওম শান্তি।”

এস এম কৃষ্ণ, (SM Krishna) ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি কেবল কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী (SM Krishna) হিসেবে নয়, তার পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ভারতের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।

তার রাজনৈতিক জীবন ছিল এক গভীর অধ্যায়। তিনি ১৯৬০ দশকের শেষ থেকে রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং কংগ্রেস পার্টির হয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে কর্ণাটক অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে, বিশেষত বেঙ্গালুরু শহরকে প্রযুক্তির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি নানা উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি রাজ্যের অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, বিশেষত শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান অমূল্য।

করোনাকালে তার রাজনৈতিক আদর্শ ও দায়িত্বের প্রতি নিবেদিত ভাবনা অনেকের কাছে প্রশংসিত হয়েছিল। তাঁর সততা, কর্মক্ষমতা এবং দেশপ্রেম ছিল অনুপ্রেরণাদায়ক।

এস এম কৃষ্ণকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান, পদ্ম বিভূষণ প্রদান করা হয়েছিল, যা তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের জন্য একটি বিশাল সম্মান ছিল। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন এবং জনগণের প্রতি অঙ্গীকার তাকে আজীবন স্মরণীয় করে রাখবে।

করুণমূর্তি হিসেবে পরিচিত, কৃষ্ণের নেতৃত্বে কর্ণাটক রাজ্য শুধু আর্থিক দিক থেকে নয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকেও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। তাঁর রাজনৈতিক কৌশল এবং উদার মনোভাব রাজ্যের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান প্রতিষ্ঠা করেছে।

তিনি ছিলেন একজন শুদ্ধ রাজনীতিক, যিনি দেশের স্বার্থে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তার অন্তর্দৃষ্টি এবং নেতৃত্বে কর্ণাটক রাজ্যের পরিকাঠামো এবং প্রশাসনিক কাঠামো ছিল সুদৃঢ়। তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের উন্নতির জন্য কাজ করেছেন, যার জন্য তিনি এক প্রজন্মের আদর্শ হয়ে উঠেছেন।

এছাড়া, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কৃষ্ণ ভারতের রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। তার নেতৃত্বের সময় কর্ণাটকের রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছিল এবং রাজ্যটির অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটেছিল। তাঁর অবদান রাজ্যের ইতিহাসে চিরকাল অম্লান থাকবে।