সম্প্রতি বাংলাদেশের এক প্রাক্তন সেনাকর্তারর বিতর্কিত মন্তব্য (Bangladeshi army threat) নিয়ে সরগরম দুই বাংলার রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল। একটি ভিডিওতে বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, তাঁরা যেকোনো সময় ভারত দখলের জন্য প্রস্তুত। এই মন্তব্যে ভারতের বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এদিকে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) এ মন্তব্যকে “শতাব্দীর সেরা রসিকতা” বলে ব্যঙ্গ করেছেন।
কলকাতা দখলের হুঁশিয়ারি: বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু
বাংলাদেশি সেনাকর্তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, বিশেষ করে কলকাতা, আসাম ও দিল্লি দখলের মতো বিস্ময়কর হুমকি। তাঁদের দাবি, তাঁরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত এবং ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের খবর মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই এই মন্তব্যকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বিজেপি নেতার কটাক্ষ
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য এই মন্তব্যকে চরম উপহাসের চোখে দেখেছেন। তাঁর প্রতিক্রিয়ায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ কিছু কথা। শমীক ভট্টাচার্য বলেন,
“বাংলাদেশি প্রাক্তন সেনাকর্তাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে চিটফান্ড মালিকদের দিয়ে দেশ চালানো সম্ভব! হাসব না কাঁদব, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।”
তিনি আরও বলেন যে ভারত সরকার যথাযথ সময়ে এই হুমকির উপযুক্ত উত্তর দেবে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে তারা সম্পূর্ণ সচেতন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া: হাস্যরসের বন্যা
এই মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশের এমন হুমকি শুধু অবাস্তব নয়, বরং হাস্যকর। এক ব্যবহারকারী মজা করে বলেন,
“তাঁদের পরিকল্পনা শুনে মনে হচ্ছে এটি কোনো নতুন বলিউড সিনেমার চিত্রনাট্য হতে পারে।”
অন্যদিকে, কিছু ব্যবহারকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে বলেছেন,
“ভারতীয় সেনাবাহিনী তাঁদের শক্তি এবং সাহস দিয়ে যেকোনো সময়ে এমন হুমকির জবাব দিতে প্রস্তুত।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
শুধু বিজেপি নয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এই হুমকির নিন্দা জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের এক তৃণমূল নেতা বলেন,
“এ ধরনের মন্তব্য সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীন। দুই দেশের শান্তি এবং সহযোগিতার সম্পর্কের পক্ষে এটি ক্ষতিকর।”
ভারত সরকারের অবস্থান
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া না হলেও সেনাবাহিনী ও সীমান্ত সুরক্ষায় কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,
“এ ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র শোরগোল সৃষ্টি করার জন্য এবং বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই।”
বাংলাদেশি প্রাক্তন সেনাকর্তাদের এই মন্তব্য দুই দেশের মধ্যকার সুসম্পর্কে কিছুটা হলেও ফাটল সৃষ্টি করতে পারে। তবে ভারতের রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিক্রিয়া এবং সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি প্রমাণ করে যে, এ ধরনের হুমকি কার্যত শূন্য। শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া বোঝায় যে, এ ধরনের হুমকি ভারতবাসীর কাছে কেবল হাস্যরসের উপাদান।
এখন দেখার বিষয়, দুই দেশের সরকার এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয় এবং ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য যাতে আর না হয়, তার জন্য কী ব্যবস্থা নেয়।