বিভিন্ন ধাপে ভারতের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাচ্ছে ভারতের পড়শি দেশ বাংলাদেশ (India Bangladesh Trade)। দেশটি ইতিমধ্যেই আলু ও পেঁয়াজ আমদানির জন্য বিকল্প দেশের সন্ধান শুরু করেছে। কারণ বাংলাদেশ আর শুধুমাত্র ভারতের ওপর আলু এবং পেঁয়াজ আমদানির জন্য নির্ভর করতে রাজি নয়। এ জন্য তাঁরা ছ’টি দেশ চিহ্নিত করেছে। তবে এই দেশগুলোর সঙ্গে এখনও আমদানির বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি কিন্তু আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশের আলু এবং পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের ওপর নির্ভরতা কমানোর জন্য সরকারের উদ্যোগের আরও একটি কারণ রয়েছে। তা হল ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারের অস্থিতিশীলতা। বিগত কয়েক মাসে ভারতীয় বাজারে আলু এবং পেঁয়াজের দাম দ্রুত বেড়ে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশকে এই দুটি পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।
রবিবার ডিজেলের দাম বেড়ে দাঁড়াল ৯২.৩৯ টাকা, কলকাতায় কত দাম রয়েছে পেট্রোলের?
ভারতের সাথে সংযোগ স্থলবন্দরগুলোতে পণ্য আমদানি ও রফতানি প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে অনেক সময় ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে, ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্যও চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) আলু ও পেঁয়াজ আমদানির জন্য ভারতের বাইরে বিকল্প দেশগুলোর নাম উল্লেখ করে একটি রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে এবং তা দেশের বাণিজ্য মন্ত্রকে জমা দিয়েছে।
এই রিপোর্টে বাংলাদেশ কেন ভারতের বাইরে থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি করতে চায়, সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। রিপোর্টটি নিয়ে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সংবাদমাধ্যমকে বিটিটিসি-র চেয়ারম্যান মইনুল খান জানিয়েছেন, “ভারত থেকে আলু এবং পেঁয়াজ আমদানিতে গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিরতি দেখা গেছে, যা আমাদের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিরাট চক্রান্ত! চিন্ময় দাসকে আরও মামলায় জড়ালো বাংলাদেশে
এমন পরিস্থিতিতে এক বা দু’টি দেশের ওপর নির্ভর করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই আমাদের বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে হচ্ছে, যাতে কখনোই সরবরাহ সমস্যা না হয়।” বর্তমানে বাংলাদেশ মূলত আলু এবং পেঁয়াজ আমদানি করে ভারত থেকে। তবে বিটিটিসি-র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আলু আমদানি করতে ভারতের বাইরে চিন, জার্মানি, মিশর এবং স্পেনের নাম চিন্তা করা হচ্ছে। পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের মূল নির্ভরতা ছিল ভারত।
তবে এখন চিন, তুরস্ক এবং পাকিস্তান থেকেও কিছু পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। বিটিটিসি-র প্রতিবেদনে এসব দেশের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতের ওপর নির্ভরতা কমানোর পেছনে বাংলাদেশের একাধিক কারণ রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ এবং নয়াদিল্লি-ঢাকা সম্পর্কের অবনতি এর একটি কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। ভারতের গ্রেফতারি এবং সেই পরবর্তী ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
২০২৪-এ আইআইএফসিএল অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পদে নিয়োগ, জানুন আবেদনের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের রাস্তায় বাংলাদেশ নিয়ে প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে এবং রফতানি বন্ধের দাবি তোলা হয়েছে। যদিও ঢাকার কর্মকর্তাদের দাবি, ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অবনতি নয় বরং দেশের বাজারে আলু ও পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি এবং রফতানি সীমিত হওয়ার কারণেই বিকল্প বাজার খোঁজা হচ্ছে। সাধারণত নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের দাম বেড়ে গেলে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।
তাই সরকার আগাম পদক্ষেপ হিসেবে বিকল্প আমদানি উৎসের সন্ধান করছে, যাতে এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির সুযোগ কমে যায়। ভারতীয় বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশকে এই পণ্যগুলো আমদানিতে এক ধরনের চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। সেইসঙ্গে ভারতের বিভিন্ন স্থলবন্দরগুলোতে আমদানি প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণেও ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিকল্প দেশ থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানির ফলে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং ভারতের উপর নির্ভরশীলতা কমানো সম্ভব হবে।
মোদীর আমলে ৬০ শতাংশ কমেছে রেল দূর্ঘটনা, রিপোর্ট রাজ্যসভায়
তাছাড়া এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে ব্যবসা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য উপকারী হতে পারে। এদিকে, বাংলাদেশ সরকার আশা করছে যে, বিকল্প দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি স্থাপিত হলে, দেশটির বাজারে আলু ও পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকবে এবং রফতানি ক্ষেত্রে কোন ধরনের অস্থিরতা হবে না।
India Bangladesh Trade: Bangladesh is gradually reducing its dependency on India for trade, particularly for importing potatoes and onions. The country has started looking for alternative sources and has identified six countries for potential imports. However, final agreements with these countries have not yet been reached, and discussions are ongoing. https://ekolkata24.com/