স্কুলে চলছে পরীক্ষা, গার্ড দিচ্ছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা, অবাককাণ্ড বহরমপুরে

স্কুলে (School) চলছে পরীক্ষা (Exams), গার্ড দিচ্ছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (Self-Help Group) মহিলারা (women), অবাককাণ্ড বহরমপুরে (Bahrampur)। শ্রীপুর জুনিয়র হাই স্কুলের বর্তমান অবস্থা শ্রীপুরের গ্রামের মানুষের…

School Exams Self-Help Group

স্কুলে (School) চলছে পরীক্ষা (Exams), গার্ড দিচ্ছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (Self-Help Group) মহিলারা (women), অবাককাণ্ড বহরমপুরে (Bahrampur)। শ্রীপুর জুনিয়র হাই স্কুলের বর্তমান অবস্থা শ্রীপুরের গ্রামের মানুষের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করা এই বিদ্যালয়ে, শুরুতে তিনজন স্থায়ী শিক্ষক এবং দুইজন অতিথি শিক্ষক ছিলেন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি বদলেছে। কয়েক বছর আগে, তিন স্থায়ী শিক্ষক বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান এবং একজন অতিথি শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন। ফলে বর্তমানে শুধু একমাত্র অতিথি শিক্ষক বদরুল ইসলাম রয়েছেন, যিনি একাই সমস্ত দায়িত্ব পালন করছেন।

বিদ্যালয়ের এ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বদরুল ইসলাম জানান, “আমার বিদ্যালয়ে ৭৫ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে, কিন্তু আমি ছাড়া এখানে আর কোন শিক্ষক নেই। একাই এত ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে পড়ানো এবং তাদের পরীক্ষা পরিচালনা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এত ছাত্রের জন্য দুইটি ঘরে পাঠদান করা হয়, যা ছাত্রদের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের আরও শিক্ষক প্রয়োজন, তা না হলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।”

   

এদিকে, শিক্ষকের অভাবে পরীক্ষার সময় ছাত্রদের সহায়তায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এগিয়ে এসেছেন। গ্রামে স্বনির্ভর গোষ্ঠীটির সদস্যরা স্কুলে গার্ডের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সাহায্য নিয়ে বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলছে। তবে এই ব্যবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না, কারণ একজন শিক্ষক বা গার্ডের পক্ষে ছাত্রদের পড়াশোনার প্রয়োজনীয়তা মেটানো সম্ভব নয়।

এই অবস্থায়, অবসরপ্রাপ্ত অতিথি শিক্ষক সালাম শেখও মাঝেমধ্যে বিদ্যালয়ে যান। তিনি বলেন, “আমি এখন অবৈতনিক শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে এসে ছাত্রদের সাহায্য করি, কারণ ছাত্রদের পড়াশোনা নিয়ে আমারও দুশ্চিন্তা রয়েছে। স্কুলে শিক্ষক সংকটের কারণে পড়ুয়াদের জন্য অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমি আমার বাড়ি থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে এসে ছাত্রদের সহায়তা করি, তবে একের পক্ষে এত ছাত্রকে পড়ানো সম্ভব নয়।”

এদিকে, বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে গ্রামবাসীরা চরম অসন্তুষ্ট। তারা দ্রুত শিক্ষকের নিয়োগের দাবি তুলেছে। গ্রামের মানুষের মতে, শিক্ষক নিয়োগ না হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ধ্বংস হয়ে যাবে এবং ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, তারা প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরতে প্রস্তুত এবং আশা করছেন, এই সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।

শ্রীপুর স্কুলের শিক্ষক সংকট শুধুমাত্র গ্রামবাসীর জন্যই উদ্বেগজনক নয়, এটি পুরো এলাকার শিক্ষাব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। অনেক ছাত্রছাত্রী তাদের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে, কারণ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষকরা নেই। শ্রীপুর স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই জটিল এবং দ্রুত সমাধানের প্রয়োজন। স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ না হলে শিক্ষার মান ধ্বংস হতে পারে এবং ছাত্রদের ভবিষ্যত অন্ধকারে পরিণত হতে পারে।

সুতরাং, শ্রীপুর স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ এবং স্কুলের অবস্থা উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ। তারা চাইছেন, শ্রীপুর স্কুলে অবিলম্বে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক, যাতে শিক্ষার্থীরা ভালো শিক্ষা লাভ করতে পারে এবং বিদ্যালয়ের ভবিষ্যত আলোকিত হয়।