ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস (High Commission of India Dhaka) রবিবার (৮ ডিসেম্বর) জমায়েত কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদানের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি নিয়েছে (BNP) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সংগঠন। এই ছাত্র সংগঠনটি বাংলাদেশের (Bangladesh) পূর্বতন শাসক দল বিএনপির শাখা সংগঠন। তাদের জমায়েত কর্মসূচি থেকে দূতাবাস আক্রান্ত হতে পারে এমনই আশঙ্কা। দূতাবাসের নিরাপত্তা বলয় জোরদার করা হয়েছে। (Bangladesh Security beefed up at Indian High Commission in Dhaka due to BNP protest)
ছাত্রদল সংগঠনটির তরফে জানানো হয়েছে, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে প্রতিবাদী পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
ভারতের দূতাবাসের সামনে বিরাট জমায়েত: (Security beefed up at Indian High Commission in Dhaka):
‘ছাত্রদল’ সংগঠনের নেতারা সামাজিক মাধ্যমে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্তা দিচ্ছেন, ভারতের দূতাবাসের সামনে বিপুল জমায়েত করা হবে। তাদের এই দাবি থেকেই দূতাবাসের কর্মী ও কূটনীতিকরা শঙ্কিত। যদিও কূটনৈতিক এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
ঢাকার সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে ছাত্রদল সংগঠন ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সমর্থকদের মিছিলে কড়া নজর রাখছে পুলিশ। আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারি হাইকমিশনে হিন্দুত্ববাদীদের হামলা হয়েছিল। এর জেরে বাংলাদেশের সর্বত্র চলছে প্রতিবাদ। তবে আগরতলার ঘটনার পর ঢাকা ও চট্টগ্রামে থাকা ভারতের দূতাবাসে নিরাপত্তা আরও বেড়েছে। ভারতীয় কূটনীতিকরা আক্রান্ত হননি।
ঢাকা-দিল্লি কূটনৈতিক সংঘাত:
আগরতলায় বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলার পরেই কলকাতা ও আগরতলার দূতাবাসের দায়িত্ব থেকে শীর্ষ দুই কূটনীতিককে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে ডেকে পাঠিয়ে কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানানো হয়। তিনি বলেন বন্ধুত্ব থাকবে।
ভারতের বিদেশ সচিব নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করবে। জানা যাচ্ছে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএস নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে জমায়েত করবে। তার আগেই রবিবার ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন ঘিরবে বিএনপি।
Security beefed up at Indian High Commission in Dhaka due to BNP protest
খালেদা জিয়ার দল বিএনপি কী বলছে?
বিএনপি দল সংশ্লিষ্ট ছাত্র-গণসংগঠনের নেতারা বলেছেন ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে মিছিল থেতে কোনওরকম উস্কানিমূলক বার্তায় বিভ্রান্ত হয়ে উত্তেজক পদক্ষেপ না নিতে প্রচার চলেছে। তাদের অভিযোগ, এই কর্মসূচির সময় উত্তেজক বার্তা দিতে পারে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে রক্তাক্ত গণবিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হন শেখ হাসিনা। তিনি ভারতে আশ্রিত। এরপর বাংলাদেশে শুরু হয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের শাসন। এই সরকারের আমলে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রাইম ট্রাইবুন্যালে মামলা চালাচ্ছে। তার দল আওয়ামী লীগের শাখা সংগঠন ‘ছাত্রলীগ’ নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত।
বি়এনপি দলটি বিগত আওয়ামী লীগ জমানায় মূল বিরোধী রাজনৈতিক অবস্থানে থেকেছে। আবার নির্বাচন বয়কট করে প্রধান বিরোধী দলের তকমা বর্জন করে। গণবিক্ষোভে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন বিএনপি ফের রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
একনজরে বিএনপি দল:
(১) বাংলাদেশের প্রথম সেনা বিদ্রোহে ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ খুন করা হয়েছিল। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের মূল নেতা। মুজিব হত্যার পর বাংলাদেশে তীব্র ডামাডোল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে ১৯৭৭ সালে সেনাকর্তা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।
(২) ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন নিজেকে সামরিক শাসক থেকে রাজনৈতিক শাসক হিসেবে তুলে ধরতে বিএনপি তথা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান।আরও একটি সেনা বিদ্রোহে ১৯৮১ সালে গুলি করে খুন করা হয়।
(৩) জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী খালেদা জিয়া বিএনপি দলটির দায়িত্ব নেন। তিনি দলটির সর্বময় নেত্রী। খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান বিএনপি দলের চেয়ারম্যান।
Supporters of Begum Khaleda Zia will enter the Indian High Commission in Dhaka to protest the attack on the Bangladesh government’s High Commission in Agartala.