কুয়োর থেকে তরুনীর চিৎকার, ‘নিশির ডাক’ আতঙ্কে প্রথমে উদ্ধার করেনি গ্রামবাসীরা

তাইল্যান্ডে (Thailand) ঘটে যাওয়া একটি অদ্ভুত ঘটনায় এক তরুণকে তিন দিন ধরে একটি পরিত্যক্ত কুয়োর ভেতরে বন্দি থাকতে হয়েছিল। তবে আরও অবাক করা বিষয় হলো,…

Woman trapped at whale in thailand news goes viral

তাইল্যান্ডে (Thailand) ঘটে যাওয়া একটি অদ্ভুত ঘটনায় এক তরুণকে তিন দিন ধরে একটি পরিত্যক্ত কুয়োর ভেতরে বন্দি থাকতে হয়েছিল। তবে আরও অবাক করা বিষয় হলো, প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে ওই তরুণের চিৎকার স্থানীয়দের মনে ভয় ধরিয়েছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, এটি ভূতের আওয়াজ! তাই তাঁকে উদ্ধার করতে কেউই এগিয়ে আসেননি।  

রাশিয়ার অর্থনীতির মেরুদণ্ড হচ্ছে ভারত, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’য় হাত মেলাল পুতিন

   

তাইল্যান্ডের (Thailand) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইউনিভার্সাল ডেলি নিউজ় জানিয়েছে, এই ঘটনা ঘটেছে তাক প্রদেশের মায়ে সোট এলাকার জঙ্গলে। ২৪ নভেম্বর, তাই-মায়ানমার সীমান্তের কাছে একটি জঙ্গল থেকে স্থানীয়রা একটি অদ্ভুত ধরনের চিৎকার শুনতে পান। গভীর রাতে ওই আওয়াজ শুনে তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই ধরে নেন, এটি কোনো অপার্থিব শক্তির কাজ। তাই ওই এলাকা এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

তিন দিন ধরে কুয়োর ভেতর থেকে তরুণটি সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ সেখানে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার সাহস পাননি। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে স্থানীয়রা শেষমেশ পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে অনুসন্ধান চালানোর পরে পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে ওই তরুণকে উদ্ধার করা হয়।

জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া তরুণের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে পুলিশ জানিয়েছে, তিনি দুর্ঘটনাক্রমে কুয়োয় পড়ে গিয়েছিলেন। আহত অবস্থায় তিনি কোনোভাবে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। পুলিশ যখন তাঁকে উদ্ধার করে, তখন তিনি শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল ছিলেন। দীর্ঘ তিন দিন না খেয়ে থাকার ফলে এবং প্রচণ্ড মানসিক চাপের কারণে তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “তরুণটি প্রচণ্ড ভীত এবং ক্লান্ত ছিল। তিনি বলছিলেন, চিৎকার করে সাহায্য চেয়েছিলেন, কিন্তু কেউ তাঁর ডাকে সাড়া দেয়নি। শেষ পর্যন্ত আমরা তাঁকে উদ্ধার করি এবং হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসার পর তিনি এখন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।”

রহস্যজনক ফ্লু জাতীয় রোগের প্রকোপ, ৭১ জনের মৃত্যু, অর্ধেক শিশু

এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিক্রিয়া ছিল মিশ্র। কেউ কেউ নিজেদের ভুল স্বীকার করে বলেছেন যে, তাঁরা ভয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে সাহস পাননি। আবার অনেকে বিষয়টি নিয়ে কুসংস্কারের প্রতি তাঁদের বিশ্বাসের কথাও বলেছেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “জঙ্গলের ভেতর থেকে এমন আওয়াজ শুনে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক। আমরা ভেবেছিলাম, এটি হয়তো ভূত বা কোনো অপার্থিব কিছু। তাই সেখানে যাওয়ার সাহস করিনি।”

এ ঘটনাটি শুধুমাত্র স্থানীয় এলাকায় নয়, তাইল্যান্ডজুড়েই আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই কুসংস্কার এবং অবৈজ্ঞানিক বিশ্বাসের কারণে কীভাবে মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

পেট্রাপোল বর্ডার বন্ধ করলে বাংলাদেশের অবস্থা শোচনীয় হবে, কড়া বার্তা শুভেন্দু

অন্যদিকে, পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারত। স্থানীয়দের ভবিষ্যতে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।

তরুণটির সৌভাগ্য যে তিন দিন পর হলেও তাঁকে উদ্ধার করা গেছে। তবে এই ঘটনা কুসংস্কারের কুফল এবং মানুষের মানবিক দায়িত্ব নিয়ে নতুন করে ভাবনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।