ইসরায়েলি ড্রোনের মাধ্যমে কান্নার শব্দ ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিদের টার্গেট করার অভিযোগ

ইসরায়েলি বাহিনী (Israel-Hamas Conflict) দাবি করা হয়েছে যে তারা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য ড্রোনে কান্নার শব্দ এবং মহিলাদের চিত্কার ব্যবহার করছে। আল জাজিরার একটি প্রতিবেদনে…

Israeli Drones Use Sounds of Crying Babies and Women to Target Palestinians

ইসরায়েলি বাহিনী (Israel-Hamas Conflict) দাবি করা হয়েছে যে তারা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য ড্রোনে কান্নার শব্দ এবং মহিলাদের চিত্কার ব্যবহার করছে। আল জাজিরার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী (Israel-Hamas Conflict) ছোট কোয়াডকপ্টার ড্রোন ব্যবহার করে ফিলিস্তিনিদের বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার জন্য তাদের ধোকা দেয়, তারপর তাদের ওপরে গুলি চালায়।

আল জাজিরা তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে এই ঘটনার ভিডিও শেয়ার করে বলেছে, “কোয়াডকপ্টারগুলি শিশুর কান্নার শব্দ এবং মহিলাদের চিৎকার শোনাচ্ছিল।” তারা দাবি করেছে, গাজার ফিলিস্তিনিরা(Israel-Hamas Conflict) জানিয়েছেন যে, ইসরায়েলি বাহিনী এসব কোয়াডকপ্টার ড্রোন (Israel-Hamas Conflict)ব্যবহার করে মাইক লাগিয়ে এসব শব্দ বাজিয়ে তাদেরকে বাড়ি থেকে বাইরে আসতে বাধ্য করছে এবং তারপর তাদের ওপরে গুলি চালাচ্ছে।

   

এ বিষয়ে আল জাজিরার একটি ভিডিওতে ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের মহা হুসেইনি বলেন, “এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমাদের জানানো হয়েছিল যে, ইসরায়েলি (Israel-Hamas Conflict) কোয়াডকপ্টারগুলি অদ্ভুত শব্দ, বিশেষত শিশুর কান্না এবং মহিলাদের চিত্কারের শব্দ শুনাচ্ছিল।” তিনি আরও বলেন, “আমি নিজে নুসিরাত (গাজার একটি অঞ্চল) গিয়ে কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আলাদাভাবে সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম, এবং তাদের দেওয়া বক্তব্য প্রায় একরকম ছিল।” মহা হুসেইনি বলেন, ড্রোনগুলো মহিলাদের চিত্কার এবং শিশুর কান্নার মতো অদ্ভুত শব্দ বাজাচ্ছিল যাতে ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে এবং তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো যায়।

হুসেইনি বলেন, “এটি হাসপাতালগুলোতে যাওয়ার পরও নিশ্চিত হয়েছিল। সেখানে এমন কিছু ঘটনা ছিল যেখানে কোয়াডকপ্টারগুলির কারণে মানুষ আহত হয়েছিল। তারা বাইরে বেরিয়ে গিয়ে দেখেছিল যে শব্দটা কোথা থেকে আসছে, এবং তারা সাহায্য করার জন্য বেরিয়ে গিয়েছিল।”

প্রথমে, এপ্রিল মাসে কিছু মিডিয়া এবং আল জাজিরা সহ বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা দাবি করেছিল যে, ইসরায়েলি ড্রোন ফিলিস্তিনিদের টার্গেট করার জন্য এই ধরনের অদ্ভুত শব্দ ব্যবহার করছে। কোয়াডকপ্টার ড্রোনগুলি শূন্যবস্তু এলাকায় শব্দ সৃষ্টি করে, যাতে ফিলিস্তিনিরা সেগুলো অনুসরণ করে এবং তখনই তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

ইসরায়েলি বাহিনীর এই পদ্ধতির উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনিদেরকে বাইরে বের করে আনা এবং তারপর তাদের ওপরে হামলা করা। এই ধরনের প্রযুক্তি, বিশেষত ড্রোন, খুবই সঠিকভাবে তাদের লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করতে সক্ষম। তবে, এই পদ্ধতি বিশেষভাবে অমানবিক এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে যে কোনও নাগরিক, বিশেষ করে যাদের পরিবারের সদস্যরা আহত বা নিহত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

এছাড়াও, এই ধরনের কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি এবং শঙ্কা তৈরি করা হচ্ছে। এটি তাদের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা ও জীবনযাত্রার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মহা হুসেইনি আরও বলেন, “এই ধরনের কার্যকলাপ মানুষের নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারকে চরমভাবে লঙ্ঘন করছে। এবং এমন ঘটনা, যেখানে একটি পরিবার তার সন্তান বা পরিবারের সদস্যদের জন্য সাহায্যের চেষ্টা করছে, এবং ড্রোনের মাধ্যমে তারা আক্রান্ত হচ্ছে, তা সত্যিই উদ্বেগজনক।”

এই ঘটনাগুলির প্রতিবাদ জানিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলি বাহিনীর এই কৌশলের নিন্দা করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলি দাবি করেছে যে, যুদ্ধের সময় এমন ধরনের কৌশল ব্যবহার করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এটি শুধুমাত্র হত্যার উদ্দেশ্য নয়, বরং এটি সাধারণ মানুষের উপর গভীর মানসিক আঘাতও সৃষ্টি করে।

গাজা অঞ্চলের মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলেছে যে, এই ধরনের কৌশল কেবল ফিলিস্তিনিদের উপর শারীরিক আক্রমণ নয়, বরং তাদের মনের উপরও আঘাত হানছে। তারা বলেছে, এমন আক্রমণের ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ভয় এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে