কলকাতার বেনিয়াপুকুর থানায় এক তরুণীর শারীরিক নির্যাতন ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার (arrested) হয়েছে এক যুবক, যার নাম নাদিম। ঘটনাটি ঘটেছে গত বছর শেষের দিকে, যখন ওই তরুণী ম্যাট্রিমনি (matrimony) সাইটে বিজ্ঞাপন দেন এবং সেখানে নাদিমের সঙ্গে পরিচয় হয়। প্রথমে ফোনে কথা বলা শুরু হয়, তারপর একে অপরকে চিনে, তারা দেখা-সাক্ষাৎ করতে শুরু করে। নাদিম নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেয় এবং তরুণী তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে।
যা কিছুই ঘটেছিল, তা শুরু হয়েছিল নাদিমের শারীরিক নির্যাতনের মাধ্যমে। জানুয়ারি মাসে, নাদিম তরুণীকে বেনিয়াপুকুরের তার বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এরপর থেকে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হয় এবং তারা একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যায়। জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে তারা একাধিক হোটেলে একসঙ্গে ছিলেন। তরুণী নাদিমকে বিয়ে করার জন্য বার বার চাপ দিতে থাকেন, কিন্তু নাদিম নানা অজুহাতে সময় কাটিয়ে যেত। প্রথমে সে দাবি করে, তার পরিবারের লোকেরা অসুস্থ, তাই বিয়েতে দেরি হচ্ছে। তারপর বলে, তার ব্যবসায় মন্দা চলছে এবং কিছু টাকা পেলে সে ব্যবসা আবার ঘুরিয়ে দাঁড়াতে পারবে।
তরুণী বিশ্বাস করে, তাকে সাহায্য করার জন্য সে তার বিয়ের জন্য জমানো ৭৭ হাজার টাকা তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠায়। এরপর, আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দেয় নাদিমকে। কিন্তু টাকা পাওয়ার পর, নাদিম তরুণীকে এড়িয়ে যেতে শুরু করে এবং তার সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে নানা সমস্যা তৈরি করতে থাকে। একসময়, নাদিম বিয়ে করতে অস্বীকার করে এবং তরুণীকে প্রতারণা করে। এ ঘটনা সম্পর্কে তরুণী বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং হোটেলগুলোর রেজিস্টার খতিয়ে দেখে, যেখানে নাদিম তরুণীকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে নাদিমের নাম ও পরিচয়পত্রের কপি উদ্ধার করা হয়। এরপর পুলিশ গত শনিবার পূর্ব কলকাতার একটি এলাকা থেকে নাদিমকে গ্রেপ্তার করে এবং তার মেডিকেল পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশের তদন্তে জানা যায় যে, নাদিম তরুণীকে প্রতারণা করার পরও তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেনি এবং বিয়ে করতে অস্বীকার করেছে।
এখন পুলিশ এই ঘটনার ব্যাপারে গভীর তদন্ত চালাচ্ছে এবং শিগগিরই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ তরুণীর কাছ থেকে নেওয়া টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছে। এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে, শখের সঙ্গীকে চিনে নেওয়া এবং বিশ্বাস করার আগে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।