চলতি বছর শেষ হওয়ার আগে তিলোত্তমার মুকুটে যুক্ত হল নয়া পালক। এবার গুণমান এবং সংখ্যার নিরিখে প্রথম স্থানে উঠে এল কলকাতা। নেচার ইনডেক্সে (Nature Index 2024) প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, সমগ্র বিশ্বে কলকাতা অধিগ্রহণ করে রয়েছে ৮৪তম স্থান। কিন্তু ভারতের মধ্যে অর্থাৎ দেশে শীর্ষস্থান দখল করে রয়েছে কলকাতা। বিশ্বের বিভিন্ন শহর থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের গুণমান এবং সংখ্যার ভিত্তিতে একটি তালিকা তৈরি করেছে নেচার ইনডেক্স।
এই তালিকায় দেশে প্রথম স্থান দখলকারী কলকাতার পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বেঙ্গালুরু। এটি রয়েছে ৮৫তম স্থানে। এরপর ৯৮তম স্থানে রয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে পরিচিত মুম্বই। ভারতের রাজধানী দিল্লি রয়েছে ১২৪তম স্থানে। যা ভারতের বাকি শহরগুলোর তুলনায় নিচে অবস্থান করছে। হায়দরাবাদ রয়েছে ১৮৪তম স্থানে।
কলকাতায় দুর্ঘটনা কমাতে বাস পরিষেবায় নয়া নির্দেশিকা, যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকলে পেতে হবে শাস্তি
অর্থাৎ ভারতের বিভিন্ন শহরগুলোর মধ্যে গবেষণায় যে বৈষম্য রয়েছে তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। নেচার ইনডেক্সের তালিকায় ২০০টি শহর স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে কলকাতার পরে রয়েছে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শহর। এডিনবরা, হেলসিঙ্কি, ম্যাঞ্চেস্টার, ব্রিস্টল, প্রাগ, ক্লিভল্যান্ড, ফ্র্যাঙ্কফুর্ট, পার্থ, লিসবন এবং আরও অনেক শহর।
এগুলোর প্রতিটি শহর বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রকাশনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং নিজেদের অঞ্চলে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি অর্জন করেছে। অন্যদিকে নেচার ইনডেক্সে গবেষণা এবং বৈজ্ঞানিক প্রকাশনীর ক্ষেত্রে প্রকাশিত তালিকায় বিশ্বের মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে চিনের বেজিং। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিনের আর এক শহর শাংহাই। বেজিং ও শাংহাইয়ের পরেই চিনের অন্যান্য শহরগুলোও প্রথম দশে স্থান পেয়েছে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জামিন দিতে রাজি নয় ইডি, সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি বুধবার
এর মধ্যে রয়েছে নানজিং (পঞ্চম), গুয়াংঝৌ (অষ্টম) এবং উহান (নবম)। চিনের বাইরে থেকে আমেরিকার কয়েকটি শহরও প্রথম দশে স্থান পেয়েছে। নিউ ইয়র্ক ও বস্টন তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সান ফ্রান্সিসকো এবং বল্টিমোর-ওয়াশিংটন ষষ্ঠ এবং সপ্তম স্থানে রয়েছে। এই শহরগুলো আমেরিকার বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রথম দশের মধ্যে একটি জায়গা পেয়েছে জাপানের টোকিয়োও।
নেচার ইনডেক্সের তালিকা শুধু শহরগুলোর অবস্থানকেই তুলে ধরছে না বরং একটি দেশের বা অঞ্চলের বৈজ্ঞানিক গবেষণার পরিমাপও প্রকাশ করছে। চিন, আমেরিকা, জাপান, ভারত ছাড়াও এই তালিকায় আরও অনেক দেশ ও শহর স্থান পেয়েছে। ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া, সুইৎজ়ারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ব্রিটেন, জার্মানি, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, তাইওয়ান, ইটালি, রাশিয়া, বেলজিয়াম, ইজ়রায়েল, ফিনল্যান্ড, পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, নরওয়ে, সৌদি আরব, আয়ারল্যান্ড, ব্রাজিল, পর্তুগালের মতো দেশগুলোর শহরগুলোও তালিকায় রয়েছে।
এবার রাতের বেলাতেও মিলবে সূর্যের আলো, মানব ইতিহাসের যুগান্তকারী আবিষ্কার
এই তালিকা দেখাচ্ছে যে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবনে পৃথিবীর শহরগুলোর মধ্যে একটি শক্তিশালী প্রতিযোগিতা চলছে। প্রতিটি দেশ ও শহর নিজ নিজ অবস্থান শক্তিশালী করতে গবেষণা ও উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এটি শুধু দেশের জন্য নয় বরং বৈশ্বিক অগ্রগতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের শহরগুলোর মধ্যে কলকাতা, বেঙ্গালুরু, মুম্বই এবং দিল্লি, সকলেই নিজেদের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে আরও বেশি উন্নতির জন্য এসব শহরের মধ্যে সহযোগিতা এবং নিরন্তর গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।