ভারতের আবহাওয়া (Weather Update) দপ্তর (IMD) সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি “ফেঙ্গাল” নামে একটি ঘূর্ণিঝড়ে (Weather Update)পরিণত হয়েছে।
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে এই নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে (Weather Update) রূপান্তরিত হয় এবং বর্তমানে এটি তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কেরালায় ভারী বৃষ্টিপাত (Weather Update)এবং প্রবল বাতাস আনতে চলেছে। আগামী কয়েকদিনে দক্ষিণ ও উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস( Weather Update) দেওয়া হয়েছে।
৩০ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত, ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গাল পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে ১৩ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। এটি ১২.৩° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮০.৯° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থান করছে। এই অবস্থান অনুযায়ী, এটি পুদুচেরি থেকে ১২০ কিমি পূর্ব-উত্তরপূর্বে, চেন্নাই থেকে ১১০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে, এবং নাগাপট্টিনম থেকে ২০০ কিমি উত্তর-উত্তরপূর্বে অবস্থিত।
ঘূর্ণিঝড়টি তামিলনাড়ুর কারাইক্কাল এবং মহাবলীপুরমের মাঝামাঝি এলাকা, পুদুচেরির কাছাকাছি, ৭০-৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলে জোরালো বাতাস এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে।
বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস
ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গালের কারণে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কেরালায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। পরবর্তী কয়েকদিনে এই অঞ্চলগুলিতে ব্যাপক বর্ষণ এবং বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।
তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি: এই দুই অঞ্চলে আগামী কয়েকদিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলীয় এলাকাগুলিতে প্রবল বাতাস এবং জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনাও রয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ: দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। নিম্নাঞ্চলগুলি জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কেরালা ও কর্ণাটক: এই রাজ্যগুলির বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও, কিছু এলাকায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিপদ মোকাবিলার ব্যবস্থা
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গালের কারণে সম্ভাব্য ঝুঁকির জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে তৎপর রয়েছে।
নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলি মানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের সমুদ্রের কাছাকাছি যাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
মৎস্যজীবীদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে যাওয়া নিষেধ।
জরুরি প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।
ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন বিদ্যুৎ এবং টেলিকম সেবা ব্যাহত হতে পারে, তাই বিকল্প প্রস্তুতি রাখা উচিত।
প্রাকৃতিক পরিবেশ ও কৃষির উপর প্রভাব
এই ঘূর্ণিঝড় কৃষিক্ষেত্রের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষিক্ষেত্র প্লাবিত হতে পারে, যা ধান, কলা, এবং অন্যান্য ফসলের ক্ষতি করতে পারে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি ভূগর্ভস্থ জলস্তর পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গাল দক্ষিণ ভারতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত এবং প্রবল বাতাসের কারণে যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনগণকে সচেতন থাকতে এবং নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা একান্ত প্রয়োজন। একমাত্র সক্রিয় পদক্ষেপের মাধ্যমেই এই চ্যালেঞ্জ সামাল দেওয়া সম্ভব।