মাল ব্লকের (Malbazar) ডামডিমের চাকলা বস্তি এলাকায় সম্প্রতি বন দপ্তরের একটি খাঁচায় ধরা পড়ল একটি সাব-অ্যাডাল্ট চিতাবাঘ। এলাকায় চিতাবাঘের উপদ্রব গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাসিন্দারা ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। তাদের অভিযোগ, চিতাবাঘটি তাদের গবাদি পশু, হাস-মুরগি এবংএমনকি ছাগলও শিকার করছিল। ওই এলাকাটি উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স (Doors wildlife) অঞ্চলের আওতাধীন।
“আমরা চাল, ডাল না পাঠালে তো খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে”, সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলীপের
এই চিতাবাঘের কারণে চাকলা বস্তির বাসিন্দারা কয়েক সপ্তাহ ধরে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন। চিতাবাঘটি এলাকায় বসবাস শুরু করার পর থেকে অনেক পশুপাখি নিখোঁজ হয়ে যায়। বাসিন্দারা সন্দেহ করতে শুরু করেন যে তাদের এই ক্ষতির জন্য চিতাবাঘই দায়ী। বিশেষ করে, চিতাবাঘ রাতে সক্রিয় হওয়ায় বাসিন্দারা রাতে ঘর থেকে বের হতে সাহস করতেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয়রা বন দপ্তরের শরণাপন্ন হন এবং তাদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান।
অভিযোগ পাওয়ার পর মালবাজার বন দপ্তর দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। চিতাবাঘ ধরার জন্য তারা এলাকায় বেশ কয়েকটি খাঁচা পেতে শুরু করে এবং ছাগলকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে। বন দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, চিতাবাঘ ধরা প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং অত্যন্ত সাবধানে পরিচালনা করতে হয়।
শনিবার সকালে খাঁচায় চিতাবাঘ আটকে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা খাঁচা থেকে গর্জনের শব্দ শুনে বুঝতে পারেন, চিতাবাঘটি ধরা পড়েছে। পরে বন দপ্তরের কর্মকর্তারা এসে চিতাবাঘটিকে নিরাপদে উদ্ধার করেন। ধরা পড়া চিতাবাঘটি সাব-অ্যাডাল্ট অর্থাৎ পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পথে। কর্মকর্তারা জানান, এটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে এবং বনাঞ্চলে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
বাসিন্দারা মনে করছেন, এটি একমাত্র চিতাবাঘ নয়, এলাকায় আরও চিতাবাঘ থাকতে পারে। তারা পুরো এলাকায় আরও খাঁচা বসানোর দাবি করেছেন, যাতে চিতাবাঘের উপদ্রব পুরোপুরি দূর করা যায়। তাদের মতে, চিতাবাঘ মানুষের আবাসস্থলের কাছে আসার মূল কারণ খাদ্যের অভাব এবং আবাসস্থলের সংকট। তারা বন দপ্তরের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন এবং আশা করছেন, প্রশাসনের সঠিক ব্যবস্থাপনায় তারা নিরাপদে জীবনযাপন করতে পারবেন।
বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চিতাবাঘটি নিরাপদে বনাঞ্চলে মুক্তি দেওয়া হবে এবং এর গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হবে। এছাড়া, এলাকায় আরও খাঁচা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে বাকি চিতাবাঘ থাকলে সেগুলোকেও ধরা যায়।
এই ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে বন দপ্তর এলাকার মানুষদের জন্য সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্মশালায় চিতাবাঘের আচরণ, তাদের উপস্থিতি বোঝার পদ্ধতি এবং এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত, সে সম্পর্কে নির্দেশ দেওয়া হবে।