ভারতে ‘আশ্রিত’ শেখ হাসিনা চিন্ময়কৃষ্ণের মুক্তি চাইলেন

গণবিক্ষোভে বাংলাদেশ (Bangladesh) ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) গত ৫ আগস্ট থেকে ভারতে আশ্রিত। তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে গণহত্যা চালানো হয়েছিল এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক…

গণবিক্ষোভে বাংলাদেশ (Bangladesh) ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) গত ৫ আগস্ট থেকে ভারতে আশ্রিত। তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে গণহত্যা চালানো হয়েছিল এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালে মামলা চলছে। তবে শেখ হাসিনা বারবার বিভিন্ন বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে যাচ্ছেন। এবার তিনি নিজ দেশে ধর্মীয় প্রবক্তা চিন্ময়কৃষ্ণর হয়ে সরব। যদিও বিবৃতিতে ওই ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেননি হাসিনা। তিনি লিখেছেন “সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের একজন শীর্ষ নেতা”।

শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন গত ৫ আগস্ট। আর গত ২৫ আগস্ট চট্টগ্রামে এক ধর্মীয় সমাবেশ থেকে চিন্ময়কৃষ্ণ দাস উত্তেজক ভাষণ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ওই সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপর ধর্মীয় পতাকা রাখা হয়েছিল। এই দুই অভিযোগের ভিত্তিতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। তিনি ইসকনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ইসকন বাংলাদেশ শাখা জানিয়েছে, চিন্ময়কৃষ্ণর কোনও কর্মকাণ্ডের দায় নেওয়া হবে না।

   

চিন্ময়কৃষ্ণর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীদের হামলা হয়েছিল চট্টগ্রাম আদালতে। সরকারি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে খুন করা হয়। এর জেরে বাংলাদেশ উত্তপ্ত। এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার বিবৃতি প্রকাশ করেছে তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তিনি দলটির সভাপতি।

শেখ হাসিনার বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “চট্টগ্রামে একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে, এই হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে দ্রুত শাস্তি দিতে হবে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। একজন আইনজীবী তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিল, আর তাকে এভাবে যারা পিটিয়ে হত্যা করেছে তারা সন্ত্রাসী। তারা যেই হোক না কেন শাস্তি তাদের পেতেই হবে।

অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী ইউনূস সরকার যদি এই সন্ত্রাসীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তাকেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। দেশবাসীর প্রতি আমি আহবান জানাচ্ছি, এই ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

বর্তমান ক্ষমতা দখলকারীরা সর্বক্ষেত্রেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব‍্যমূল‍্য নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ। সাধারণ মানুষের উপরে প্রত‍্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এইসব নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাই।

সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের একজন শীর্ষ নেতাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। চট্টগ্রামে মন্দির পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইতিপূর্বে মসজিদ, মাজার, গির্জা, মঠ এবং আহমাদিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি আক্রমণ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সকল সম্প্রদায়ের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী, ছাত্র-জনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার পরে চলছে হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের মাধ্যমে হয়রানি। আমি এসব নৈরাজ‍্যবাদী ক্রিয়াকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। “