বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ও ইসকনের সন্ন্যাসী গ্রেফতারের ঘটনায় এবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রকে বাংলাদেশের (Bangladesh) হিন্দু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হওয়া আক্রমণ ও নিগ্রহের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপে সমর্থন জানাবেন। বাংলাদেশে এক হিন্দু আধ্যাত্মিক নেতা, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সেদেশের সিডিশন (দেশদ্রোহ) মামলায় গ্রেফতার করা হয় এবং পরে তার জামিন আবেদনও খারিজ করা হয়। তারপরেই এমন মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
বাংলাদেশে হিন্দু-নির্যাতন, ISCON ইস্যুতে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্রিটেনের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি এই বিষয়টি নিয়ে বাংলায় ইস্কন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন, তবে বিষয়টি তার প্রশাসনিক আওতার বাইরে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে যা কিছু ঘটছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং এই ধরনের ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলা এবং নিগ্রহের ঘটনা বেড়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষত, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির পর এই পরিস্থিতি আরও তীব্র হয়েছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি অত্যাচার এবং তাদের ন্যায়বিচারের অধিকার খর্ব করার অভিযোগ অনেক দিন ধরেই উঠে আসছে। এসব ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর মনোভাবের প্রতি সমর্থন জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হিন্দু সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং বাংলাদেশ সরকারের উচিত এসব পরিস্থিতি মোকাবেলায় দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
স্বাস্থ্যসাথীর ব্যবহারে অনিয়ম, তদন্তের ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবস্থান অনেকের কাছেই স্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ তিনি বারবার বলেন যে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হলে সংখ্যালঘুদের প্রতি আক্রমণ বন্ধ হওয়া উচিত। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সরকারিভাবে এই সমস্যায় হস্তক্ষেপ না করার কথা বললেও, তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি এই ইস্যুতে জনগণের পাশে দাঁড়াবেন এবং আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি মানবাধিকার সংক্রান্ত চাপ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনে কূটনৈতিক সমর্থন জানাবেন।
মমতার এই মন্তব্যের পর, বিজেপি পক্ষ থেকে তার সমালোচনা করা হতে পারে। বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যে কিছুদিন আগে দাবি করা হয়েছিল যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাংলাদেশের হিন্দু সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াতে গড়িমসি করছে। মমতার এই অবস্থান প্রধানমন্ত্রী মোদীর সরকারকে সমর্থন জানালেও, তাতে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাজ্যে ট্যাব কেনার টাকা সাইবার হানায় গায়েব, কড়া পদক্ষেপে মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের মাধ্যমে, তিনি বাংলাদেশের সরকারকে একটি কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রতি আক্রমণ শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য বাংলাদেশের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে সহায়ক হতে পারে। এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।