বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক, আর সম্পর্ক ভাঙলেই ‘ধর্ষণ’, প্রবণতায় উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট

বিয়ের আগে শারীরক সম্পর্ক,তারপর বিয়ে না হলে সহবাসের অভিযোগ পুরুষ সঙ্গীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা। এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of…

supreme court said no urgency in rg kar case hearing

বিয়ের আগে শারীরক সম্পর্ক,তারপর বিয়ে না হলে সহবাসের অভিযোগ পুরুষ সঙ্গীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা। এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) । বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court of India) বেঞ্চ সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, যা নারী ও পুরুষের সম্পর্ক, বিশেষ করে শারীরিক সম্পর্কের সম্মতির ভিত্তি সম্পর্কে গভীর আলোচনা সৃষ্টি করেছে। আদালত উল্লেখ করেছে যে, দীর্ঘদিনের শারীরিক সম্পর্ক থাকলেও যদি নারী বিবাহের দাবি না করেন, তবে এটি সম্মতির ভিত্তিতে তৈরি সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে, বর্তমানে যদি এই ধরনের সম্পর্ক কোনও কারণে ভেঙে যায়, অনেক সময় পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ বিভিন্ন ফৌজদারি ধারায় মামলা করা হচ্ছে। এই প্রবণতা আদালতের মতে উদ্বেগজনক, কারণ এটি সম্পর্কের সম্মতি ও তার প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে নতুন বিতর্ক তৈরি করছে। 

রেকর্ড প্রতিরক্ষা রফতানি ও উৎপাদন বাড়াচ্ছে ভারতের অর্থনীতি- জেপি মর্গান

   

এ ধরনের মামলাগুলি, যেখানে নারী বা পুরুষ শারীরিক সম্পর্কের পরে মামলার আবেদন করেন, সমাজের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে মনোভাব এবং আইন ব্যবস্থার যথাযথ প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে ধরে। বিশেষত, যখন কোনো শারীরিক সম্পর্ক সম্মতির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং সেখানে ভবিষ্যত সম্পর্কে কিছুটা অস্পষ্টতা থাকে, তখন তার পরে মামলা দায়ের হওয়া পুরুষের জন্য একটি আইনগত জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের ঘটনায় প্রায়ই ধর্ষণ এবং অন্যান্য ফৌজদারি মামলা তৈরি হয়, যা একদিকে পুরুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে উঠতে পারে, অন্যদিকে সম্পর্কের প্রকৃত পরিস্থিতি এবং সম্মতির ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

এই প্রসঙ্গে, মহারাষ্ট্রের একটি মামলার উদাহরণ উল্লেখ করা যেতে পারে, যেখানে এক মহিলা অভিযোগ করেছেন যে ২০০৮ সালে তিনি একজন পুরুষের কাছে চাকরি পান, যিনি তখন অসুস্থ স্ত্রীর দেখাশোনা করতে তাকে নিয়োগ করেছিলেন। পরে, অভিযুক্ত পুরুষ তাকে জোর করে বারবার যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন এবং বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন, যদিও তার দুটি স্ত্রীর মধ্যে একাধিক অসুস্থতা ছিল। ২০১৭ সাল থেকে তিনি মহিলাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতিও ভুলে যান। এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, যখন পুরুষ সম্মতি নিয়ে কোনো সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং সেই সম্পর্কের পরবর্তী সময়ে কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তখন নারীর অভিযোগে পুরুষের বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে আইনগত জটিলতা তৈরি হতে পারে।

World Bank: অচিরেই দেউলিয়া হচ্ছে ১০০-র বেশি দেশ, বিশ্বব্যাঙ্কের তালিকায় নাম রয়েছে ভারতের?

আদালতের মন্তব্যে আরও বলা হয় যে, সম্মতির ভিত্তিতে তৈরি সম্পর্কের স্বীকৃতি, যা অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে চলে, তার পরবর্তী অবস্থা যদি বিবেচনায় নেওয়া না হয়, তবে তা সম্পর্কের প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং স্বীকৃতির মধ্যে গ্যাপ সৃষ্টি করতে পারে। বর্তমানে যেহেতু শারীরিক সম্পর্কের পর আইনগত সমস্যা তৈরি হচ্ছে, সেখানে ন্যায়ের বাস্তব প্রয়োগ এবং সম্পর্কের প্রকৃত অবস্থা বিচার করে সিদ্ধান্ত নেয়া অত্যন্ত জরুরি।

নারী নির্যাতন ইস্যুতে উত্তাল বিধানসভা, বিক্ষোভ বিজেপির

এই পরিস্থিতিতে সমাজে এক ধরনের দ্বৈত মানদণ্ড সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে একদিকে সম্মতির ভিত্তিতে সম্পর্ক হতে পারে, অন্যদিকে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর ধর্ষণের অভিযোগও উঠতে পারে। তাই আদালতের পরামর্শ হচ্ছে, যেখানে সম্মতি পরিষ্কার নয় বা কোনো প্রতিশ্রুতি ছিল, সেখানে আইন ও সমাজের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। আদালত আশা প্রকাশ করেছে যে, সম্পর্কের বিষয়টি সঠিকভাবে বিচার করা উচিত, যাতে কোনো পক্ষের অযথা ক্ষতি না হয়।