হাওড়ার গোলাবাড়ি (Golabari) এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের (Hospital) বিরুদ্ধে চিকিৎসার গাফিলতি (Negligence), রোগীর মৃত্যু (Patient Death) গোপন রেখে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর সুরজ শর্মা (৩৬) নামে এক যুবক দুর্ঘটনায় আহত হন এবং তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুরজের পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছিল, এবং হাসপাতালের পক্ষ থেকে অস্ত্রোপচারের জন্য ৩ লক্ষ টাকা (Money) খরচ হবে বলে জানানো হয়।
অস্ত্রোপচারের পর সুরজকে আইসিইউতে রাখা হয়, এবং পরে জেনারেল বেডে স্থানান্তরিত করা হয়। পরদিন, অর্থাৎ মঙ্গলবার, হাসপাতাল থেকে সুরজের পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ২ লক্ষ টাকা চেয়ে হাসপাতালে আসতে বলা হয়। টাকা জমা দেওয়ার পর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুরজের মৃত্যুর খবর দেয়। তবে, পরিবারের দাবি, সুরজের মৃত্যু ভোরবেলা ঘটেছিল, কিন্তু হাসপাতাল প্রথমে তা গোপন রাখে এবং পরবর্তী সময়ে টাকার বিনিময়ে মৃত্যুর খবর জানায়।
এই ঘটনার পর, মৃত রোগীর পরিবার এবং স্থানীয়রা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সময় ধরে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখেছিল এবং টাকার জন্য পরিবারকে বিভ্রান্ত করেছে। বিক্ষোভের সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বেশ কয়েকজনকে আটক করে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “গোলাবাড়ি থানা থেকে আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং তিন জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে, সুরজের পায়ে অস্ত্রোপচার করার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছিল এবং পরে আবার অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, কখন সুরজ মারা গিয়েছিল, তা পরিষ্কার নয়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে, গোলাবাড়ি এলাকার এই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অনেক দিন থেকেই চিকিৎসা গাফিলতি এবং রোগীর মৃত্যু গোপন রাখার অভিযোগ রয়েছে। এটি এখন হাওড়া শহরের অন্যতম বিতর্কিত হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এই ঘটনায় একদিকে যেমন পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে হাসপাতালের বিরুদ্ধে একটি নতুন তদন্ত শুরু হয়েছে।এছাড়া, মৃত রোগীর পরিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।