ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়তে রুশ-ইউক্রেন (Ukraine Russia conflict) সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর কোরীয় সেনা বাহিনীকে। আর ইউক্রেনের মতো মুক্ত দুনিয়ায় পা রেখেই ইন্টারনেটের স্বাদ পেয়েছে কিমের দেশের সেনা। আর যারফলে অবাধ পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে উত্তর কোরীয়ার (North Korea) সেনারা। যার জেরে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিঘ্নিত হচ্ছে সেনাদের মনোযোগে।
ইজরায়েলের ওপর ২৫০ টি রকেট ছুঁড়ে ভয়াবহ হামলা হামাসের, বিধ্বস্ত তেল আভিভ
সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদনে জানা গেছে, রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করতে উক্রেনে পাঠানো উত্তর কোরিয়ার সেনারা ইন্টারনেটের অবাধ প্রবেশাধিকার পেয়ে অত্যন্ত উৎসাহিত। উত্তর কোরিয়ার মতো এক দেশ, যেখানে নাগরিকদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকার প্রায় নেই বললেই চলে, সেখানকার সেনাদের জন্য এমন অভিজ্ঞতা ছিল একেবারেই নতুন। তবে এই প্রবেশাধিকার নিয়ে সেনাদের একাংশের কার্যকলাপ ইতোমধ্যেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমস-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সেনারা ইন্টারনেটে প্রাপ্তবয়স্কদের বিষয়বস্তু দেখতে মগ্ন হয়ে পড়েছেন। তারা প্রায় “গিলছেন” এমন কন্টেন্ট, যা তাদের জন্য আগে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। যদিও প্রতিবেদনে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি যে কীভাবে এই সেনাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের তথ্য জানা গেছে, তবু ধারণা করা হচ্ছে, এই বিষয়টি রাশিয়ার বিভিন্ন সামরিক সূত্রের মাধ্যমে উঠে এসেছে।
মহারাষ্ট্র ভোটে গুন্ডাগিরি চালিয়েছে বিরোধীরা, কংগ্রেসকে নিশানা মোদীর
উত্তর কোরিয়ার মতো দেশের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার এবং অবাধ তথ্য প্রবাহ একেবারেই অচেনা। দেশটিতে অত্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে কেবলমাত্র উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাই সীমিত ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পান। এ ধরনের পরিস্থিতিতে উক্রেনের মতো জায়গায় গিয়ে সম্পূর্ণ অবাধ ইন্টারনেট পেয়ে সেনাদের আচরণে পরিবর্তন আসাটা অপ্রত্যাশিত নয়।
এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র, লেফটেন্যান্ট কর্নেল চার্লি ডিটজ বলেন, “আমরা উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভ্যাস বা ভার্চুয়াল কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নিশ্চিত নই।” দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এই তথ্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি।উত্তর কোরিয়ার সেনারা রাশিয়ার হয়ে উক্রেনে যুদ্ধ করছে, এমন খবরে আন্তর্জাতিক মহল আগেই অবাক হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। রাশিয়া যখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে চাপে রয়েছে, তখন উত্তর কোরিয়ার সহায়তা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
কিন্তু সেনাদের এই আচরণ নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার পরও তারা অনলাইনে যে ধরনের বিষয়বস্তুতে আসক্ত হয়েছেন, তা থেকে বোঝা যায় যে তারা প্রযুক্তির নতুন দিকগুলো সম্পর্কে কতটা কৌতূহলী। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উত্তর কোরিয়ার সেনারা হয়তো যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, কিন্তু ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারের জন্য মানসিক প্রস্তুতি তাদের ছিল না।
উত্তরপ্রদেশে সম্ভালে মসজিদ সমীক্ষা ঘিরে সংঘর্ষ অব্যাহত, মৃত ৪
উত্তর কোরিয়ার সেনাদের এই ধরনের আচরণ রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার জন্য বিব্রতকর হতে পারে। যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদের দায়িত্ববোধ প্রশ্নবিদ্ধ হলে এটি যুদ্ধ পরিচালনায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া এটি রাশিয়ার সামরিক শৃঙ্খলার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়ার মতো একটি দেশ, যেখানে নাগরিকদের অধিকাংশই কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে বসবাস করেন, সেখানকার সেনাদের এই অবাধ ব্যবহার তাদের ভবিষ্যৎ মনোভাবেও পরিবর্তন আনতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা তাদের দেশে ফেরার পর নতুন একটি চিন্তাধারার জন্ম দিতে পারে।