হিন্দুত্বের জয় বলে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ ওড়ালেন শরদ পাওয়ার

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে (Maharashtra election) মহাযুতি তথা এনডিএ-র নিরঙ্কুশ জয়ের পর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার “হিন্দু ঐক্য” এবং ভোটারদের মেরুকরণকেই এই…

Sharad Pawar Maharashtra Elections

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে (Maharashtra election) মহাযুতি তথা এনডিএ-র নিরঙ্কুশ জয়ের পর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার “হিন্দু ঐক্য” এবং ভোটারদের মেরুকরণকেই এই জয়ের প্রধান কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি ইভিএম কারচুপির অভিযোগ সরাসরি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “ইভিএম নিয়ে অভিযোগ করে কোনো লাভ নেই। এটা স্পষ্ট যে যোগী আদিত্যনাথের ‘বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ স্লোগান ভোটারদের প্রভাবিত করেছে।”

মহিলাদের ভোটদান এবং হিন্দুত্বের প্রভাব
শরদ পাওয়ার মহিলাদের বিপুল ভোটদানকে এনডিএ-র জয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন, “মহিলাদের ভোটের হার এবারে খুব বেশি ছিল, এবং তাদের একটা বড় অংশ মহাযুতিকে সমর্থন করেছেন।” পাশাপাশি যোগী আদিত্যনাথের স্লোগান এবং হিন্দুত্বের তাস ভোটারদের মধ্যে হিন্দু ঐক্য গড়ে তুলতে সহায়ক হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।

   

অজিত পাওয়ারের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি
এনসিপি-র অভ্যন্তরীণ বিবাদের মধ্যেও শরদ পাওয়ার বলেন, “অজিত পাওয়ার মহারাষ্ট্রে বেশি আসন জিতেছেন। এটা মানতেই হবে। কিন্তু সকলেই জানেন কে এনসিপি-র আসল প্রতিষ্ঠাতা।” তাঁর এই বক্তব্য অজিত পাওয়ার শিবিরের দিকে পরোক্ষ বার্তা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

ইভিএম প্রসঙ্গে তাঁর অবস্থান
বিভিন্ন বিরোধী দল যেখানে মহাযুতির জয়কে ইভিএম কারচুপির ফলাফল বলে দাবি করেছে, সেখানে শরদ পাওয়ার সেই তত্ত্বকে সরাসরি নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, “জনগণের রায়কে সম্মান করা উচিত। ইভিএম নিয়ে অভিযোগ করে কোনো লাভ নেই। বরং নিজেদের শক্তি বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে।”

রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার প্রতিশ্রুতি
বয়স ৮৩ হলেও রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন শরদ পাওয়ার। তিনি বলেন, “আমি এখনও সক্রিয় রাজনীতিতে থাকব। আমার অভিজ্ঞতা দলের কাজে লাগাতে চাই।”

যোগী আদিত্যনাথের প্রভাব এবং রাজনৈতিক মেরুকরণ
যোগী আদিত্যনাথের হিন্দু তাস এবং ‘বাটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ স্লোগান নিয়ে শরদ পাওয়ার বলেন, “এই ধরনের বক্তব্য ভোটারদের মেরুকরণ করতে বড় ভূমিকা নিয়েছে। হিন্দু ঐক্যের একটা বড় অংশ এবারে মহাযুতির দিকে ঝুঁকেছে।”

বিরোধীদের সামনে চ্যালেঞ্জ
মহারাষ্ট্র নির্বাচনের ফলাফল বিরোধী দলগুলির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠে এসেছে। শরদ পাওয়ার বলেন, “এই নির্বাচনের ফলাফল বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য একটা বড় বার্তা। নিজেদের শক্তি বাড়ানো এবং মাটিতে কাজ করাই এখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।”

মহারাষ্ট্র নির্বাচনে মহাযুতির সাফল্যের পর শরদ পাওয়ারের এই ব্যাখ্যা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ভোটের রাজনীতিতে হিন্দুত্ব এবং মহিলাদের সমর্থন কতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইভিএম কারচুপির অভিযোগের পরিবর্তে তিনি বাস্তব পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলে রাজনৈতিক সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন।