অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhra Pradesh) অনন্তপুর (Anantapur district) জেলায় বাস ও অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষে ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় (Road accident in India) অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু (Chandrababu Naidu) দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ১৩ জন শ্রমিক একটি অটোতে করে যাচ্ছিলেন। তাঁরা থিম্মাপেটার কাছে একটি কলাবাগানে কাজ করতেন। কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে গার্লাডিনের তালাগাসিপল্লি মোড়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বিপরীত দিক থেকে আসা অন্ধ্রপ্রদেশ স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের একটি বাস হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোর সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা খায়।
ধাক্কার তীব্রতায় অটোটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ৭ জন প্রাণ হারান। বাকি আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
নিহত এবং আহতরা সবাই অনন্তপুর জেলার পুটলুর মণ্ডলের এল্লুটলা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা দিনমজুর ছিলেন এবং দৈনন্দিন জীবিকার জন্য কলাবাগানে কাজ করতেন। দুর্ঘটনার ফলে পুরো গ্রাম শোকে ভেঙে পড়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য সমস্ত খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক এবং শোকের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, গার্লাডিনের তালাগাসিপল্লি মোড়টি দীর্ঘদিন ধরেই দুর্ঘটনার জন্য পরিচিত। এই রাস্তায় বারবার দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন, রাস্তার পরিস্থিতি উন্নত করতে এবং দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে যে, বাসের চালক হয়তো গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি, যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, বাসটি অত্যধিক দ্রুত গতিতে চলছিল।
এই দুর্ঘটনা স্থানীয় মানুষদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। দিনমজুরেরা নিজেদের জীবিকার জন্য প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবহণে নির্ভর করতে বাধ্য হন। এই পরিস্থিতি তাদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে যেসব রাস্তায় ঘনঘন দুর্ঘটনা ঘটে, সেসব রাস্তায় সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি।