রবিবার উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) সাম্ভালে (Sambhal) একটি মসজিদের সমীক্ষা ঘিরে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একটি মসজিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, সেটি আগে একটি মন্দির ছিল। আদালতের নির্দেশে এই সমীক্ষা শুরু হলেও, স্থানীয়দের একাংশ এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানায়।
৬৪ শতাংশ মুসলিম ভোটার, লক্ষাধিক ভোটে জয়ী বিজেপি
সাম্ভালের শাহী জামা মসজিদের কাছে আদালতের নির্দেশে সমীক্ষা চালাতে একটি সরকারি দল উপস্থিত হলে বিক্ষোভ শুরু হয়। শতাধিক প্রতিবাদী সমীক্ষার বিরোধিতা করে সেখানে জমায়েত হন। বিক্ষোভ দ্রুত হিংসাত্মক রূপ নেয়। পাথর ছোঁড়া শুরু হয় সমীক্ষা দলের দিকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের একটি বড় দল সেখানে উপস্থিত থাকলেও, উত্তেজিত জনতাকে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে আলোচনার চেষ্টা করে। কিন্তু পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটতে শুরু করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর মতো পদক্ষেপ নিতে হয়।
মহারাষ্ট্রে বিজেপির জয়ে ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
জানা গেছে, স্থানীয় এক ব্যক্তি আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন যে, শাহী জামা মসজিদের জায়গাটি আগে একটি মন্দির ছিল। এই অভিযোগের ভিত্তিতে আদালত সমীক্ষার নির্দেশ দেয়। তবে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন এবং সমীক্ষার বিরোধিতা করেছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা অভিযোগ করেছেন যে, এই সমীক্ষা তাদের ধর্মীয় ভাবনাকে আঘাত করছে এবং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমাদের ধর্মীয় স্থানের সম্মান রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। এটি আমাদের আত্মসম্মানের প্রশ্ন।”
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে যে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সমীক্ষা চালানো হচ্ছে এবং এর সঙ্গে কোনও পক্ষপাতিত্ব নেই। প্রশাসনের তরফে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত রয়েছে এবং এলাকাজুড়ে পুলিশি প্রহরা জারি করা হয়েছে।
এই সংঘর্ষের কারণে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। দোকানপাট বন্ধ রয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। প্রশাসন জানিয়েছে যে, দায়ীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আরও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আইসিসি-বিসিসিআইয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকের খবর অস্বীকার করল পিসিবি
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা ধর্মীয় সম্প্রীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে এবং প্রশাসনের উচিত দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা ফেরাতে তৎপর হওয়া।
সাম্ভালের এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, ধর্মীয় স্থানের বিতর্ক কতটা স্পর্শকাতর হতে পারে। প্রশাসন শান্তি বজায় রাখতে এবং আইনি প্রক্রিয়া মেনে কাজ চালিয়ে যেতে চেষ্টা করছে। তবে, স্থানীয় জনতাকে শান্ত রাখতে আরও উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই সংঘর্ষের প্রভাব কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং প্রশাসন কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবে, তা এখন সময়ই বলবে।