পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার সান্দাকফু (Sandakphu), যা তার অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং উচ্চতর ট্রেকিং রুটের জন্য পরিচিত, সেখানে চলতি বছরেই পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে। সম্প্রতি, কলকাতার ভবানীপুরের বাসিন্দা আশিস ভট্টাচার্য (৫৮) সান্দাকফুতে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মঙ্গলবার রাতে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সৃষ্টি হলে তার মৃত্যু হয়। এর আগে, একইভাবে সান্দাকফুতে এক পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ফলে এই দুর্ঘটনার পর প্রশাসন এখন বেশ উদ্বিগ্ন, এবং তারা সান্দাকফু এবং অন্যান্য পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শনকারী পর্যটকদের জন্য শারীরিক পরীক্ষা ও স্বাস্থ্য নির্দেশিকা চালু করার পরিকল্পনা করছে।
আমেরিকায় ঘুষকাণ্ড! আদানীকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব রাহুল গান্ধী
আশিস ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন, এবং সান্দাকফু যাওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। শ্বাসকষ্ট এবং উচ্চতর পাহাড়ি অঞ্চলে অক্সিজেনের অভাবের কারণে অনেক পর্যটক এমন সমস্যায় পড়েন। এই কারণে, দার্জিলিং জেলার প্রশাসন এবং গৌরীপুর পাহাড়ি ট্যুরিজম কর্তৃপক্ষ এখন নতুন স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
আশিস ভট্টাচার্যের মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসন তৎপর হয়ে উঠেছে। দার্জিলিং সদরের মহকুমাশাসক রিচার্ড লেপচা জানিয়েছেন, “পর্যটকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা শীঘ্রই একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করব। এই নির্দেশিকায় শারীরিক পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কিছু নতুন নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করা হবে।” তিনি আরও জানান, শারীরিক পরীক্ষা ও নির্দেশিকা পরবর্তী সপ্তাহ থেকে কার্যকর হবে।
এই নিয়মগুলি কার্যকর হলে, সান্দাকফু বা অন্যান্য পাহাড়ি অঞ্চলে বেড়াতে যাওয়ার আগে পর্যটকদের শারীরিক অবস্থা যাচাই করা হবে। বিশেষ করে যারা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হবে।
Arpita Mukherjee: মায়ের মৃত্যু, প্যারোলে মুক্তি পেলেন পার্থ-সঙ্গিনী অর্পিতা
প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, পর্যটকদের শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য বেশ কিছু মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করা হতে পারে। এসব ক্যাম্পে পর্যটকদের শারীরিক অবস্থার ভিত্তিতে মেডিক্যাল চেকআপ করা হবে, এবং যাদের শারীরিক অবস্থা ভালো হবে না, তাদের পাহাড়ি এলাকায় যাওয়া থেকে বিরত রাখা হবে। এছাড়া, সান্দাকফু ও আশপাশের অন্যান্য পাহাড়ি অঞ্চলে হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করার কথাও ভাবা হচ্ছে।
এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে, প্রশাসন আশাবাদী যে পর্যটকদের মৃত্যু এবং দুর্ঘটনা কমানো যাবে এবং পাহাড়ি অঞ্চলের খ্যাতি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা যাবে।
সান্দাকফু ও এর আশপাশের এলাকা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বিশেষ করে কাঁকড়াঝোরা, মাকালু ও কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। তবে, উচ্চতর পাহাড়ি এলাকায় যাওয়ার জন্য শারীরিক সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সান্দাকফুতে পর্যটকদের উচ্চতা এবং অক্সিজেনের অভাবের কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে, যা মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
গৌতম আদানি বিরুদ্ধে ২২০০ কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ, এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের
এমন পরিস্থিতিতে, প্রশাসনের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শুধু পর্যটকদের জীবন রক্ষা নয়, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি দৃষ্টান্তও স্থাপন করা হবে।
সান্দাকফুতে মৃত্যুর ঘটনা একটি সতর্কতা হিসেবে কাজ করতে পারে, এবং এই ধরনের উদ্যোগ পর্যটন শিল্পের সুরক্ষা এবং টেকসই বিকাশে সহায়ক হতে পারে। পর্যটকদের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থা চালু হলে, ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে।