দিল্লি মেট্রো আর শুধু একটি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম নয়, এটি দিল্লির মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লাইফলাইন হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রতিদিন মেট্রো ব্যবহার করে এবং এটি এখন দিল্লিতে ভ্রমণের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য উপায়। সম্প্রতি, দিল্লি মেট্রো একদিনে সর্বোচ্চ যাত্রী রাইডারশিপের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে, যা প্রমাণ করে যে মেট্রো কেবল একটি যান নয়, এটি দিল্লিবাসীদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
ডিআরএমসি (দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজ দয়াল বলেছেন, 18 নভেম্বর 2024-এ মোট 78 লাখ 67 হাজার 17 জন যাত্রী মেট্রো রুটে ভ্রমণ করেছিলেন। দিল্লি মেট্রোর ইতিহাসে এটি একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক যাত্রী চড়ার ঘটনা। এর আগে, 2024 সালের 20 আগস্ট 77 লাখ 49 হাজার 682 জন মেট্রোতে ভ্রমণ করেছিলেন, যা আগের রেকর্ড ছিল। 18 নভেম্বরের এই নতুন রেকর্ড আরও একবার প্রমাণ করল মেট্রোর জনপ্রিয়তা।
উল্লেখযোগ্যভাবে, 2024 সালে, 23 দিনে মেট্রো যাত্রার সংখ্যায় একটি নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছিল। 18 নভেম্বরের পর, 2024 সালের আগস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে মেট্রোর ইতিহাসে সেরা 25টি রাইডারশিপ দিনের মধ্যে 23টি ছিল৷ এমনই একটি দিন ছিল 23 আগস্ট, যখন মেট্রোর যাত্রীর সংখ্যা ছিল সবচেয়ে কম, সেটিও 73 লাখ, যা আগের তুলনায় অনেক বেশি। এটি প্রমাণ করে যে দিল্লির মানুষ এখন মেট্রোকে তাদের প্রথম পছন্দ হিসাবে গ্রহণ করেছে।
কেন বাড়ছে মেট্রোতে যাত্রী সংখ্যা?
বিভিন্ন কারণে মেট্রোতে আরোহীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রথমত, পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে মেট্রো জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। দিল্লিতে রাস্তার ট্রাফিক একটি সাধারণ সমস্যা, এবং মেট্রো ব্যবহার করে লোকেরা সহজেই তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। যানবাহন চলাচলের চাপ কমানোর পাশাপাশি পরিবেশেরও কম দূষণ ঘটাচ্ছে। ফলস্বরূপ, মেট্রো ব্যবহার পরিবেশের জন্যও উপকারী, বিশেষ করে বায়ুর গুণমান উন্নত করার ক্ষেত্রে।
দ্বিতীয়ত, মেট্রো ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি কম ব্যবহার করছেন। ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে মেট্রো ব্যবহার করলে রাস্তায় যানবাহনের চাপ কম হয় এবং শহরের পরিবেশে কার্বন নিঃসরণও কম হয়। এই কারণে, দিল্লির বায়ুর গুণমান উন্নত হয় এবং শহরের পরিবেশ আরও স্বাস্থ্যকর থাকে।
যাত্রীদের সুবিধার্থে ডিজিটাল সেবা
যাত্রীদের আরও সুবিধা দেওয়ার জন্য DMRC বিভিন্ন ডিজিটাল পরিষেবা চালু করেছে। বর্তমানে, যাত্রীরা সহজেই ইন্টারনেট বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট বুক করতে পারেন, তাই স্টেশনে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এতে করে তাদের সময় বাঁচে এবং যাত্রা আরও সুবিধাজনক হয়। অতিরিক্তভাবে, মেট্রো টিকিট বুকিং সিস্টেমের সাথে আইআরসিটিসি, এনসিআরটিসি এবং অন্যান্য পরিবহন পরিষেবার সংযোগ রয়েছে, যা যাত্রীদের অন্যান্য পরিবহন মোড ব্যবহার করার অনুমতি দেয়।
পরিবেশগত স্থায়িত্ব এবং নিরাপত্তা
DRMC হল বিশ্বের প্রথম মেট্রো সিস্টেম যা জাতিসংঘ কর্তৃক কার্বন ক্রেডিটের জন্য নিবন্ধিত হয়েছে, এবং এটি পরিবেশগত টেকসইতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচিত হয়। এছাড়াও, DMRC যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং আরামের দিকেও গুরুত্ব দেয়। তাদের উদ্দেশ্য হল দিল্লি এবং পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ বাড়ানো এবং পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি করা।
মেট্রো এখন দিল্লির মানুষের জন্য ভ্রমণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। পরিবেশ-বান্ধব, নিরাপদ এবং সুবিধাজনক হওয়ায় মেট্রো অন্যদের তুলনায় মানুষের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে।