সপ্তাহে ৮৯ ঘন্টা ডিউটির নির্দেশ, হত্যার হুমকিতে আতঙ্কিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও

সপ্তাহে ৮৯ ঘন্টা কাজের নির্দেশ দিয়ে খুনের হুমকি পাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও দক্ষ গুপ্তা (Daksh Gupta) সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, তিনি তার সংস্থা গ্রেপটাইল-এর কাজের…

Indian-origin CEO claims he got death threats over 84-hour workweek policy

সপ্তাহে ৮৯ ঘন্টা কাজের নির্দেশ দিয়ে খুনের হুমকি পাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিইও দক্ষ গুপ্তা (Daksh Gupta) সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, তিনি তার সংস্থা গ্রেপটাইল-এর কাজের সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলার পর থেকে একাধিক “মৃত্যুর হুমকি” পেয়েছেন। গ্রেপটাইল নামের এই এআই স্টার্টআপের সিইও, দক্ষ গুপ্ত, তার সংস্থার ৮৪ ঘণ্টার কর্মসপ্তাহ এবং “কোনও কাজ-জীবন ভারসাম্য নেই” এমন নীতির কথা উল্লেখ করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। 

দিল্লি দূষণে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি, কেন্দ্র-রাজ্যকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

   

গুপ্ত একটি ভাইরাল পোস্টে বলেন, তাদের সংস্থার কর্মসংস্কৃতি অত্যন্ত কঠোর। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা বা তার বেশি সময় পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে হয়। শনিবারও নিয়মিত কর্মদিবস হিসেবে বিবেচিত এবং অনেক সময় রবিবারেও কাজ করতে হয়। এমন কঠোর সময়সূচি কর্মীদের জন্য চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করেছে, কিন্তু গুপ্তর মতে, এটি তাদের সংস্থার কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির মূল চাবিকাঠি।

দক্ষ গুপ্ত তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন যে, গ্রেপটাইল কর্মীদের মধ্যে কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতা তৈরি করতে চায়। তিনি লেখেন, “আমাদের সংস্থা এমন একটি জায়গা যেখানে কর্মীরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত এবং অসাধারণ কিছু অর্জনের জন্য নিজেদের উজাড় করে দিতে ইচ্ছুক।” তার মতে, এই কঠোর পরিশ্রমই সংস্থাকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে সহায়তা করছে।

কিন্তু তার এই মন্তব্য অনেকের কাছে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কর্মজীবনে ভারসাম্যের অভাব নিয়ে অভিযোগ তুলে অনেকেই গুপ্তর এই দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর মানুষ তার বক্তব্যকে “অমানবিক” এবং “অনৈতিক” বলে আখ্যা দিয়েছেন। অনেকে বলেন, কাজের পরিবেশ এমন হওয়া উচিত নয় যে, তা কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। 

আর মাত্র কয়েকদিন, ডিসেম্বরেই হাইড্রোজেন ট্রেন যাত্রা শুরু করছে ভারতে

তবে বিতর্ক এখানেই শেষ হয়নি। দক্ষ গুপ্ত দাবি করেছেন যে, তার এই বক্তব্যের পর থেকেই তিনি একাধিক মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন। এই হুমকিগুলো তাকে এবং তার পরিবারকে আতঙ্কিত করেছে। তিনি বলেন, “আমি জানি আমার মন্তব্য অনেককে আহত করেছে, কিন্তু এটি আমার বা আমার পরিবারের জন্য এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে, তা ভাবিনি।”

গুপ্ত আরও জানান, মৃত্যুর হুমকি পাওয়ার পরে তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং তার এবং তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

নাইজেরিয়ায় সফল সফর শেষে জি-২০-তে যোগ দিতে ব্রাজিলে মোদী

এদিকে, গ্রেপটাইলের কঠোর কর্মদিবসের এই মডেল নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই স্টার্টআপের ক্ষেত্রে কর্মীদের দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করানোর প্রবণতা নতুন নয়। তবে, এমন কর্মসংস্কৃতি কর্মীদের মধ্যে কাজের প্রতি বিরক্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং সৃজনশীলতাও কমিয়ে দিতে পারে।

গুপ্ত যদিও তার সিদ্ধান্তকে ন্যায়সঙ্গত বলে দাবি করেছেন, তবে এই ঘটনার মাধ্যমে একটি বড় প্রশ্ন উঠে এসেছে—কর্মজীবন এবং ব্যক্তিজীবনের মধ্যে ভারসাম্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত কর্মসংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন কর্মীদের প্রতি আরও মানবিক মনোভাব। কঠোর পরিশ্রম জরুরি হলেও, সেটা যেন কর্মীদের মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতার ক্ষতি না করে, তা নিশ্চিত করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।