প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) রবিবার নাইজেরিয়া সফর শেষ করে ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। তিনি ব্রাজিলে G20 সামিটে অংশগ্রহণ করবেন, যা ১৮-১৯ নভেম্বর রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত হবে। নাইজেরিয়া সফরের সময়, মোদী দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবুর সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন এবং ভারতীয় সম্প্রদায়ের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এটি ছিল ১৭ বছর পর ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর।
নাইজেরিয়া সফরের শেষে মোদী এক টুইটে জানান, “ধন্যবাদ নাইজেরিয়া, এই ফলপ্রসূ সফরের মাধ্যমে ভারত-নাইজেরিয়া সম্পর্ক আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হবে।”
মন্ত্রণালয় অব দ্য এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স (MEA) টুইটারে পোস্ট করেছে, “প্রধানমন্ত্রী মোদী আবুজা, নাইজেরিয়া সফর শেষ করেছেন।” এই সফরে মোদী নাইজেরিয়ার সর্বোচ্চ সম্মাননা, “গ্র্যান্ড কমান্ডার অফ দ্য অর্ডার অফ দ্য নাইজের” (GCON) পুরস্কার লাভ করেছেন, যা তাকে দ্বিতীয় বিদেশি রাষ্ট্রনেতা হিসেবে এই পুরস্কার প্রাপ্তি লাভের সম্মান দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ ১৯৬৯ সালে প্রথম এই সম্মাননা পেয়েছিলেন। মোদী ১৭টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন, যা তার বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে গণ্য হয়।
নাইজেরিয়া সফরের সময়, মোদী প্রেসিডেন্ট তিনুবুর সঙ্গে ভারতের-নাইজেরিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য আলোচনা করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত নাইজেরিয়া সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং দেশটি সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করবে।”
মোদীর মতে, নাইজেরিয়ায় প্রায় ৬০,০০০ ভারতীয় সম্প্রদায় ভারত-নাইজেরিয়া সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ। মোদী নাইজেরিয়া সরকারকে ভারতীয় সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য কাজ করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এই সফরে মোদী আরও জানান, ভারতে আগামী মাসে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নাইজেরিয়ার জনগণের জন্য ভারত ২০ টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠাবে। ভারতে ও নাইজেরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক একে অপরকে সমর্থন করে এবং গঠনমূলক সাফল্য আনছে।
ভারত এবং নাইজেরিয়ার সম্পর্ক ২০০৭ সালের অক্টোবরে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সফরের সময় “স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ”-এ উন্নীত হয়। মোদীর এই সফর সেই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বর্তমানে তিন দেশের সফরে রয়েছেন। তার পরবর্তী গন্তব্য গায়ানা হবে। গায়ানায় তিনি ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবেন।
অবশ্যই, মোদী এবার ব্রাজিল যাচ্ছেন, যেখানে ১৮-১৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত G20 সামিটে বিশ্ব নেতাদের উপস্থিতির মধ্যে তিনি এক বিশেষ ভূমিকা রাখবেন। এতে চীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও উপস্থিত থাকবেন।
ভারত G20 ত্রৈমাসিকের অংশ হিসেবে ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতা করছে। G20 সামিটে বিশ্ব অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এই সফরের মাধ্যমে, মোদী ভারত-নাইজেরিয়া সম্পর্কের নতুন যুগের সূচনা করেছেন এবং বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতীয় অবস্থান আরও দৃঢ় হচ্ছে। G20 সামিটেও ভারতের নেতৃত্বের ভূমিকা নিশ্চিত হবে, যা দেশটির বৈশ্বিক প্রভাবকে আরও শক্তিশালী করবে।