দিল্লি যেন হিটলারের ‘গ্যাস চেম্বার’, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি এড়াতে বদলালো অফিসের সময়

দিল্লি যেন হিটলারের ‘গ্যাস চেম্বার’। দিল্লির বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) এখন তীব্রভাবে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা রাজধানীর বাসিন্দাদের জন্য ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। শনিবারও বাতাসের…

After 32 Days, Delhi Pollution Index Drops Below 300, A Wave of Joy in Delhi's Air

দিল্লি যেন হিটলারের ‘গ্যাস চেম্বার’। দিল্লির বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) এখন তীব্রভাবে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা রাজধানীর বাসিন্দাদের জন্য ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। শনিবারও বাতাসের একিউআই ছিল ৪০৬, যা ‘অত্যন্ত খারাপ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গত চার দিন ধরে দিল্লির দূষণ (Delhi Pollution) পরিস্থিতির কোনোরকম উন্নতি দেখা তো যাচ্ছেই না বরং দিনের পর দিন আরও খারাপ হয়ে উঠছে।

শহরের অধিকাংশ অঞ্চল ধোঁয়াশার চাদরে মুড়ে গেছে, যার কারণে সড়ক ও বিমান পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। এদিন দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকা ঘন ধোঁয়াশায় ঢেকে গিয়েছিল, যার ফলে দৃশ্যমানতা কমে গেছে এবং যানবাহন চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (CPCB) তথ্য অনুযায়ী, দিল্লির বাতাসের গুণগত মান ৪০৬ পৌঁছেছে।

   

মূল্যস্ফীতি আকাশ ছোঁয়া, দেশের সবচেয়ে ‘ব্যয়বহুল’ রাজ্যে ছত্তিশগড়

বিশেষ করে এমস, প্রগতি ময়দান, কালিন্দি কুঞ্জ, এবং ইন্ডিয়া গেট এলাকায় একিউআই ছিল ৪০০-র উপরে, যা ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় শ্বাসকষ্ট, কাশি, চোখজ্বালা ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যার হার বেড়ে গেছে। দূষণের কারণে মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা তৈরি হচ্ছে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ায় কাশি ও চোখজ্বালার মতো উপসর্গও বাড়ছে।

বিশেষত বাচ্চা, বয়স্ক ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে এমন মানুষের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। চিকিৎসকরা এই পরিস্থিতিতে মানুষের বাইরে না বেরোনোর এবং মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন। দূষণের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দিল্লি সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ (GRAP-3) চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে দূষণের শীর্ষ অঞ্চলে যান্ত্রিক উপায়ে জল ছিটানো হচ্ছে।

হাসিনা ভাল কাজ করেছেন, ইউনিসের মৌলবাদী বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন ট্রাম্প-শিবির

একই সঙ্গে, দূষণের মাত্রা বাড়াতে পারে এমন কিছু কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেমন নির্মাণকাজ এবং পাথর-খনন। দিল্লি সরকার সড়ক দুর্ঘটনা এবং যানজট এড়াতে সরকারি অফিসগুলির সময় পরিবর্তন করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি সরকারের অফিসের কাজের সময় সূচি নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। দূষণের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেলে, দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে বিএস-৩ পেট্রোল এবং বিএস-৪ ডিজেল গাড়িগুলির চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এতে কোনো গাড়ি এই মানের পুরনো ইঞ্জিন নিয়ে চললে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। একই সঙ্গে, দিল্লির বাইরে থেকে আসা ডিজেলচালিত ছোট বাণিজ্যিক গাড়িগুলির ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেগুলো শুধু জরুরি পরিষেবার জন্যই ঢুকতে পারবে। দিল্লি সরকারের দাবি, এই পদক্ষেপগুলো শহরের দূষণের মাত্রা কিছুটা কমাতে সহায়তা করবে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশ দূষণের দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য আরও বড়ো এবং সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তারা মনে করছেন, প্রকৃতপক্ষে কৃষি-আগুন, যানবাহন এবং শিল্পকারখানার নির্গমনকে আরও সীমিত করা প্রয়োজন। এদিকে, দিল্লিবাসীকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে যেন তারা ঘরের বাইরে না বেরোন। বিশেষত শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তিরা যেন আরো বেশি সাবধানে থাকেন।