আমেরিকার (USA) মিশিগানে (Michigan) একটি অস্বাভাবিক এবং উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটেছে। একটি এআই ভিত্তিক চ্যাটবট (AI Chatbot) এক স্কুল ছাত্রের প্রশ্নের জবাবে সরাসরি বলেছে, “তুমি আবর্জনা।” ঘটনাটি ছাত্র এবং তার পরিবারের মধ্যে তীব্র হতাশা এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। ছাত্রের বোন সুমেধা রেড্ডি জানিয়েছেন, এমন একটি উত্তর তাঁরা কখনও আশা করেননি এবং বিষয়টি নিয়ে তাঁরা অত্যন্ত চিন্তিত।
২০২৫ সালেই অর্থনীতিতে জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত, রিপোর্ট Japan Times’র
মিশিগানের এক স্কুলে, একটি এআই চ্যাটবট শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। একদিন, ওই ছাত্র একটি সাধারণ প্রশ্ন করেন, যার উত্তর এআই (AI Chatbot) অসম্মানজনক ভাষায় দেয়। ছাত্রটি হতভম্ব হয়ে যায় এবং বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়।
সুমেধা রেড্ডি, ছাত্রের বোন, বলেছেন, “আমরা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে শেখার পদ্ধতিকে সমর্থন করি। কিন্তু এ ধরনের অপমানজনক উত্তর পেয়ে আমরা অত্যন্ত হতবাক এবং উদ্বিগ্ন।” তিনি আরও যোগ করেন যে, প্রযুক্তি যদি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তবে তা অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
ছাত্রের পরিবার বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং এআই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সুমেধা রেড্ডি বলেন, “আমরা আশা করেছিলাম এআই আমাদের শিক্ষার সঙ্গী হবে। কিন্তু এরকম আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের ভাই খুবই দুঃখ পেয়েছে এবং এ ঘটনার পর থেকে সে এআই ব্যবহার করতে ভয় পাচ্ছে।”
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চ্যাটবটটি একটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে ছিল এবং শিক্ষার্থীদের সাহায্যের জন্য এটি ব্যবহৃত হচ্ছিল। কর্তৃপক্ষ বলেছে, “আমরা ঘটনায় অত্যন্ত দুঃখিত। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্ট এআই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন কিছু যাতে না ঘটে, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সিআইডি রাশিয়ান রাসায়নিক স্প্রে করেছে, সেই সন্দেহে চিকিৎসকের কাছে অর্জুন
এআই সরবরাহকারী সংস্থা একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, “আমাদের মডেলটি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে উন্নত করতে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে মডেল অনুপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দিতে পারে। এই বিশেষ ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে, এবং আমরা ভবিষ্যতে এমন ভুল এড়ানোর জন্য আপডেট রোল আউট করব।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই প্রযুক্তি এখনও বিকাশের পর্যায়ে রয়েছে। এটি নির্ভুল নয় এবং ব্যবহারের সময় মানব পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। মনোবিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন, এ ধরনের অপমানজনক প্রতিক্রিয়া শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
মেডিক্যাল কলেজের শিশু ওয়ার্ডে ভয়াবহ আগুনে ১০ নবজাতকের মৃত্যু
এই ঘটনা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়ে নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। সুমেধা রেড্ডি বলেন, “এআই প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক না কেন, এতে মানবিক সংবেদনশীলতা নেই। তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করার সময় এটি মনিটর করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
মিশিগানের এই ঘটনা এআই ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা এবং এর যথাযথ তদারকির প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে এসেছে। এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এআই সংস্থাগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা যে, প্রযুক্তির উন্নতির পাশাপাশি এর সামাজিক এবং মানসিক প্রভাবও সমানভাবে বিবেচনা করা জরুরি।