উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মীবাই মেডিক্যাল কলেজের শিশু ওয়ার্ডে (এনআইসিইউ) শুক্রবার রাতে ভয়াবহ আগুন (Jhansi Medical College Fire) লাগে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ঘটনায় অন্তত ১০ নবজাতকের দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এখনও অনেক শিশু ওই ওয়ার্ডে আটকা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
৪০ জন শিশু উদ্ধার, উদ্ধারকাজ চলছে
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিশু ওয়ার্ড থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ওয়ার্ডের ভেতরে ধোঁয়া ও আগুনের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের পর পুরো হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকল বাহিনী। উদ্ধারকাজে সহায়তা করছেন হাসপাতাল ও প্রশাসনিক কর্মীরা।
ঝাঁসির জেলা প্রশাসন ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, উদ্ধারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়।
হতাহতদের পরিবারে শোকের ছায়া
অগ্নিকাণ্ডের খবর জানার পরপরই শিশুদের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ভিড় জমাতে থাকেন। আতঙ্কগ্রস্ত পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের খুঁজে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ঘটনাস্থলে চিৎকার ও কান্নার দৃশ্য হৃদয়বিদারক।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদক্ষেপ
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। নিহত শিশুদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আহত শিশুদের দ্রুত চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জেলা প্রশাসন ও দমকল বাহিনীকে উদ্ধারকাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলিন্ডার বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে তদন্ত
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে একটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তবে আগুনের সঠিক কারণ জানতে তদন্ত চলছে। ঝাঁসির পুলিশ ও দমকল বিভাগ যৌথভাবে এই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী পদক্ষেপ
এই ভয়াবহ ঘটনায় ঝাঁসি হাসপাতালের সুরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিশু ওয়ার্ডের মতো স্পর্শকাতর স্থানে সিলিন্ডার মজুত থাকার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা চলছে। প্রশাসন জানায়, অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও কঠোর করার পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
জাতীয় শোক ও পরবর্তী সাহায্য
এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা দেশ শোকস্তব্ধ। কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মৃত শিশুদের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা আসতে পারে বলে সূত্রের খবর।
উদ্ধারকাজ শেষ হলে হাসপাতালটি আবার চালু করার জন্য নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হবে। শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুরক্ষা ও সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ দল গঠন করা হতে পারে।
এই ঘটনায় সবার একটাই আবেদন—এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে। হাসপাতাল এবং প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে, যাতে রোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।