দক্ষিণ কলকাতার আবাসনে ‘টাকার পাহাড়’, ব্যাঙ্ক থেকে এল টাকা গোনার যন্ত্র!

রাজ্যে ফের দুর্নীতির ছায়া। এবার লটারি প্রতারণা মামলায় (Lottery Fraud Case) বৃহস্পতিবার কলকাতায় তল্লাশি অভিযানে নামল ইডির বিশেষ দল। গতকালের পর আজ শুক্রবারও সেই অভিযান…

In the Lottery Fraud Case money-counting machine delivered by the bank at South Kolkata's housing

রাজ্যে ফের দুর্নীতির ছায়া। এবার লটারি প্রতারণা মামলায় (Lottery Fraud Case) বৃহস্পতিবার কলকাতায় তল্লাশি অভিযানে নামল ইডির বিশেষ দল। গতকালের পর আজ শুক্রবারও সেই অভিযান জারি রেখেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। লটারি প্রতারণা মামলার তদন্তে শুক্রবার সকাল থেকেই তল্লাশি অভিযানে নেমে পড়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আর সেই তদন্তে যা উঠে আসছে তা শুনে আপনি চমকে উঠবেন।

দিল্লি থেকে আসা ইডির সেই বিশেষ দল কলকাতার লেক মার্কেটসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। আর সেই অভিযান চালাতে গিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার করে ফেলেছে তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকেই লেক মার্কেটের প্রিন্স গোলাম মহম্মদ রোডের একটি বহুতল আবাসনে অভিযান চালানো হয়।

   

দিল্লির সরাই কালে খান চকের নাম পরিবর্তন, নতুন নাম ঘোষণা

এখানে এক ব্যক্তির ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তল্লাশি অভিযানে সেই বিপুল পরিমাণ উদ্ধার হওয়া টাকা গোনার জন্য গোনার যন্ত্রও ব্যবহার করা হচ্ছে। ইডির বিশেষ দলটি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং অনুমান করা হচ্ছে যে, উদ্ধার করা টাকার পরিমাণ কোটি কোটি টাকা হতে পারে। এছাড়া, শহরের অন্য একটি জায়গাতেও তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি।

এই এলাকায়ও টাকা গোনার যন্ত্র নিয়ে গিয়েছে ইডির কর্মকর্তারা। তদন্তে উঠে এসেছে যে, ওই লটারির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। লটারির প্রকৃত পুরস্কারপ্রাপ্তদের বঞ্চিত করে সেই টাকা অন্যদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ব্যাপারে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির যোগসূত্রও থাকতে পারে।

শীতকালীন সবজির চাহিদার মধ্যে শুক্রে বাজারে দাম কমল বিভিন্ন সবজির

এই ঘটনায় গড়ে উঠেছে একটি ব্যাপক আর্থিক প্রতারণার চক্র, যার মধ্যে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি জানিয়েছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য হল, লটারির এই বেআইনি চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব দুষ্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করা এবং এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া। এদিকে বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার মাইকেল নগরেও এই মামলায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা অভিযোগ করে বলেছেন, এই এলাকায় একটি লটারি ছাপাখানা ও গুদাম রয়েছে, যেখানে বেআইনিভাবে লটারির পুরস্কারের টাকা বণ্টন ও লেনদেন করা হচ্ছিল। মাইকেল নগরে যে ছাপাখানা ও গুদাম পাওয়া গেছে, সেখানে লটারির সস্তা কপি, পুরস্কারের টাকার ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রাজাজি টাইগার রিজার্ভ

জানা যাচ্ছে, এ ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এবং এর সাথে একাধিক অপরাধী চক্র জড়িত। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে, আয়কর দফতরের পক্ষ থেকেও উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে এক লটারি সংস্থার ছাপাখানা ও গুদামে অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই সময়ও আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল এবং তখন প্রকাশ্যে আসে যে, ওই সংস্থা প্রকৃত পুরস্কারপ্রাপ্তদের বঞ্চিত করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

এরপরে লটারির বেআইনি লেনদেনের বিষয়ে তদন্ত আরও গভীর হয়েছে এবং বর্তমানে ইডি সেই জাল ভেদ করার চেষ্টা করছে। তবে প্রতারণার এই জাল কোথায় শেষ হবে এবং কারা কারা এতে জড়িত তা জানার জন্য ইডি কর্মকর্তারা আরও তল্লাশি চালাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের প্রতারণার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

ডিভাইডারে স্করপিওর ধাক্কা, মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত ৪

এখন পর্যন্ত ইডি এবং আয়কর দফতরের তল্লাশির ফলে প্রতারণার অনেক অন্ধকার দিক সামনে উঠে এসেছে। তবে চক্রটি আরও বড় কিনা! তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতারিত ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে।