কাজল শেখের ‘ওয়াই প্লাস’ নিরাপত্তা, বীরভূমে কোর কমিটির বৈঠকের আগে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা

বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। তাকে এখন থেকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এই…

Kajal Sheikh receives 'Y+ Security' ahead of the core committee meeting in Birbhum, as political tension escalates

বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। তাকে এখন থেকে ওয়াই প্লাস নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পর থেকে জেলা তৃণমূলের ভিতরে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। বীরভূমের রাজনীতিতে কাজল শেখ ও অনুব্রত মন্ডলের (Anubrata Mandal And Kajal Sheikh) মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বের কথা রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বের অন্দরমহলে সবার কাছে পরিচিত।

অনুব্রত মন্ডল, যিনি গরুপাচার মামলায় জামিন পেয়ে তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাঁর রাজনীতি পরিচালনার বিষয়টি অনেকের কাছে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাঁর দলীয় নেতৃত্ব ছাড়াই তৃণমূল বীরভূমে গত লোকসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে সফলতা অর্জন করেছে। যার ফলে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন যে দলের পূর্ণ নেতৃত্বে অনুব্রত ফিরে আসলে কি সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

   

উপনির্বাচনের সকালে ভাটপাড়ায় দুষ্কৃতীর গুলিতে খুন তৃণমূল নেতা, চলল দেদার বোমাবাজি

এদিকে, কাজল শেখের রাজনৈতিক উত্থানও চোখে পড়ার মতো। ২০২২ সালে অনুব্রতের গ্রেফতারির পর কাজল তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করেছেন এবং ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পর তাঁকে বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি করা হয়। তিনি এখন জেলার এক শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত।

জেলা তৃণমূলের কিছু অংশ মনে করছে, কাজলের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং তাঁর গুরুত্ব বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে তার অবস্থান সুসংহত করা হচ্ছে। বিশেষ করে কোর কমিটির বৈঠকের আগে এই সিদ্ধান্তটি এমনভাবে নেওয়া হয়েছে যে, কাজল শেখের রাজনৈতিক গুরুত্ব এবং নিরাপত্তা বাড়ানোই তার প্রমাণ।

বুধে ডিজেলের দাম কমে দাঁড়াল ৮৭.৬৭ টাকা, কলকাতায় কত দাম রয়েছে পেট্রোলের?

অনুব্রত মন্ডল যিনি দীর্ঘদিন বীরভূমের তৃণমূল নেতৃত্বে ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে একসময় নানা অভিযোগ উঠলেও তিনি দলের প্রধান নেতা হিসেবে স্বীকৃত। তাঁর বিরুদ্ধে আপত্তি তুললেও দলের কর্মীরা জানেন যে, অনুব্রতের নেতৃত্ব ছাড়া জেলা সংগঠনের জন্য প্রত্যাবর্তন খুব সহজ হবে না। এমন পরিস্থিতিতে কাজলের উত্থান এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়টি দলের অন্দরমহলে কৌতূহল তৈরি করেছে।

বিশেষ করে ১৬ নভেম্বর বোলপুরে দলের কোর কমিটির বৈঠকের আগে এই ঘটনাটি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। দলের নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে কোর কমিটির সদস্যরা যেমন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ভালো। তেমনি রামপুরহাটের বিধায়ক আশিসের সঙ্গে অনুব্রতের রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে যা কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

সপ্তাহান্তেই শীতের ছোঁয়া পাবে বঙ্গবাসী! পারদ নেমে কবে পড়বে জাঁকিয়ে শীত?

কাজল ও অনুব্রতের মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যেও রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কাজল শেখের আনুগত্য দলের একাংশের কাছে স্পষ্ট। সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “বীরভূমে কোর কমিটির নেতৃত্বে কাজ করাটা উচিত, কারণ তারা ভোটে ভালো ফল করেছে।”

সেইসঙ্গে তিনি এও উল্লেখ করেছেন যে, কোর কমিটির বৈঠক পরিচালনা করবেন অনুব্রত মন্ডল। এই ঘোষণার পরও দলের মধ্যে দুটি মতামতের টানাপোড়েন অব্যাহত রয়েছে। একদল চাইছে, অনুব্রতর নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন বাড়ানো হোক আর অন্যদল কাজল শেখের গুরুত্বকেই সামনে আনছে।