উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) চারধাম (Char Dham) তীর্থযাত্রা (Yatra) এই বছর এক অন্ধকার অধ্যায়ের সাক্ষী হয়েছে, যেখানে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে ২৪৬ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু (death) ঘটেছে। কেদারনাথ, গঙ্গোত্রী, যমুনোত্রী এবং বদ্রীনাথ—এই চারটি তীর্থস্থলে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক ভক্তের আগমন ঘটে, কিন্তু এ বছর মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষত, যারা হেলিকপ্টার দিয়ে পবিত্র স্থানে পৌঁছেছিলেন, তাদের মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে।
মৃত্যুর প্রধান কারণ: উচ্চতাজনিত অসুস্থতা
উচ্চ পর্বতাঞ্চলে অবস্থিত এই তীর্থস্থানগুলিতে তীর্থযাত্রীদের মৃত্যু ঘটানোর মূল কারণ হিসেবে উচ্চতাজনিত অসুস্থতা, অক্সিজেনের ঘাটতি এবং হৃদরোগ উঠে এসেছে। হিমালয়ের উচ্চতায় অক্সিজেনের অভাব এবং শারীরিক সমস্যা তীর্থযাত্রীদের জন্য বড় বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই এই অসুস্থতার কারণে হিমালয়ের কঠিন পরিবেশে সহ্য করতে পারছেন না, যার ফলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা ঘটছে।
এই বছরের চারধাম যাত্রা এখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। কেদারনাথ, গঙ্গোত্রী, এবং যমুনোত্রী তীর্থস্থানগুলো ইতিমধ্যে শীতের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব জায়গার তাপমাত্রা শীতের সময় অনেকটাই কমে যায়, যা তীর্থযাত্রীদের জন্য আরও কঠিন করে তোলে। তীর্থযাত্রীরা এসব স্থানে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে থাকেন এবং শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে পর্বতের ওপরের মন্দিরগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে, বদ্রীনাথ তীর্থস্থান ১৭ নভেম্বর বন্ধ হয়ে যাবে, যার মানে, এবছরের যাত্রা কার্যত শেষ হতে যাচ্ছে।
হেলিকপ্টারে আসা ভক্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি
এ বছর হেলিকপ্টারে করে হিমালয়ের মন্দিরে যাওয়ার পর মারা যাওয়া ভক্তদের সংখ্যা বেশি। হেলিকপ্টার পরিষেবা সাধারণত অসুস্থ বা বৃদ্ধ তীর্থযাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক, কিন্তু এই পথটি অনেকের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠছে। অনেক তীর্থযাত্রী, যাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ছিল, তাদের হেলিকপ্টারে ওঠার পর স্বাস্থ্য আরো খারাপ হয়ে মৃত্যু ঘটেছে। শারীরিক সক্ষমতা ও উচ্চতাজনিত সমস্যা এসব মৃত্যুর পেছনে বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
চারধাম তীর্থযাত্রা ভারতের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় পর্যটন গন্তব্য হলেও, এখানে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে মানুষের মৃত্যু একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। বিশেষত, যারা শারীরিকভাবে দুর্বল বা বৃদ্ধ, তাদের জন্য এই যাত্রা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রশাসনের উচিত, ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা এড়ানোর জন্য আরও সুষ্ঠু পরিকল্পনা করা এবং তীর্থযাত্রীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরিষেবা উন্নত করা।