ভারত বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ ব্যাটসম্যান ট্রিস্টান স্টাবস (Tristan Stubbs) একটি স্নায়ু শান্ত রাখার কৌশল প্রকাশ করেছেন৷ যা তাকে মাঠে শান্ত থাকতে সাহায্য করেছিল। গেকেবারহায় নিজের প্রিয় মাঠে খেলার সময়, স্টাবস তাঁর স্নায়ু শান্ত রাখতে “শ্বাস প্রশ্বাস” নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিলেন এবং এই কৌশল তাকে শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওভারে তিন উইকেটে জয়ী করতে সহায়ক ছিল।
বিশ্ব ক্রিকেটের বড় বড় তারকাদের যখন ব্যর্থ হতে দেখা গিয়েছিল, তখন স্টাবস ও জেরাল্ড কোয়েটজি একত্রে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন এবং সিরিজটি ১-১ সমতায় নিয়ে আসেন। ম্যাচের প্রথমার্ধে, ভারতের বোলিং আক্রমণ, বিশেষ করে বরুণ চক্রবর্তীর স্পিনের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় বড় ব্যাটসম্যানরা একে একে সাজঘরে ফিরে গিয়েছিলেন। রিজা হেনড্রিকস, এডেন মার্করাম, মার্কো জানসেন, হেইনরিক ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলারের মতো তারকারা চক্রবর্তীর চমকপ্রদ বোলিংয়ে কুপোকাত হন।
এদিকে, মুম্বাইয়ের তরুণ স্পিনার রবি বিশনই অ্যান্ডিল সিমেলানকে এক বিপজ্জনক বলে আউট করে দারুণ সাফল্য পেয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ৮৮/৭ অবস্থায়, মনে হচ্ছিল তারা তাসের ঘর মতো ভেঙে পড়তে চলেছে। এমন সময় কোয়েটজি এসে ১০৩ মিটার দীর্ঘ একটি ছক্কা মেরে ম্যাচে নতুন আশা নিয়ে আসে এবং স্টাবসের সামনে টার্গেট ছিল ১২৫ রান। কিন্তু ম্যাচটি তখনও দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে ছিল না, কারণ তাদের হাতে মাত্র ৩টি উইকেট ছিল।
স্টাবস বলেন, “রান রেট কখনোই আমাদের মাথাব্যথা ছিল না, কিন্তু অবশিষ্ট উইকেটগুলোর কথা ভাবছিলাম। কোয়েটজি যখন মাঠে আসে, সে শুধু একটাই কথা বলেছিল, ‘আমরা এটা জিততে পারি’। আমি কিছুটা নার্ভাস ছিলাম, তাই আমি চেষ্টা করছিলাম শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে নিজেকে শান্ত রাখতে।”
অবশেষে, ১৩ রান দরকার ছিল দুই ওভারে। তখন স্টাবস আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। ম্যাচের পঞ্চম ওভারেই তিনি আরশদ্বীপ সিংয়ের বিরুদ্ধে পরপর দু’টি চার মেরে ম্যাচটি শেষ দিকে নিয়ে আসেন। আর শেষ ওভারে দুটি চার মেরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। স্টাবসের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স তাকে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হিসাবে মনোনীত করে এবং তিনি পরবর্তী ম্যাচে ফর্ম ধরে রাখার জন্য উত্তেজিত ছিলেন।
ম্যাচ শেষে ট্রিস্টান স্টাবস তার শ্বাস প্রশ্বাসের কৌশল নিয়ে বলেন, “আমি জানতাম যে দুইটি বড় হিট হলেই ম্যাচটি রান-এ-বলের অবস্থানে চলে আসবে। আমি শুধু শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিলাম। আজ আমার মায়ের জন্মদিন, এবং মাঠে ২০-৩০ জন মানুষ আমার খেলা দেখতে এসেছিল। এই মাঠে খেলা আমার প্রিয়।”
এখানে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে, ভারতীয় বোলারদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার বড় বড় ব্যাটসম্যানরা চক্রবর্তী এবং বিশনইয়ের স্পিন আক্রমণের সামনে বেশ কঠিন সময় পার করেছেন। এর ফলে, ম্যাচটি কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু স্টাবস এবং কোয়েটজির সাহসী পারফরম্যান্স দক্ষিণ আফ্রিকাকে শেষ পর্যন্ত জয়ের দিকে নিয়ে যায়।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের এই নাটকীয় পরিণতির পর, দক্ষিণ আফ্রিকার দল নতুন উদ্দীপনা নিয়ে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে অংশ নিতে প্রস্তুত। স্টাবসের ম্যাচে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স প্রমাণ করলো যে তার মধ্যে অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় খেলার ক্ষমতা রয়েছে, এবং তিনি ভবিষ্যতে আরও বড় ম্যাচে এই কৌশল কাজে লাগাতে পারবেন।
বিশ্ব ক্রিকেটে স্টাবসের খেলা নিয়ে অনেক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। ভারতীয় বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে তার সাহসী ইনিংস দক্ষিণ আফ্রিকাকে সাফল্যের পথ দেখিয়েছে, এবং স্টাবসের তরুণ কেরিয়ারের জন্য এটি এক বড় মাইলফলক হতে পারে।