কানাডিয়ান সাংবাদিক টেরি মাইলেভস্কি খালিস্তান ইস্যুতে (Khalistan issue) কানাডার মনোভাবের তীব্র সমালোচনা করেছেন, এবং এটিকে “জাতীয় অপমান” আখ্যা দিয়েছেন। রবিবার তিনি এই বিষয়ে একটি সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি কানাডার খালিস্তান পন্থী আলাদা করন আন্দোলন নিয়ে অব্যাহত সমালোচনা করেন।
মাইলেভস্কি বলেন, “আমি বিগত ২০ বছর ধরে বলেছি যে, কানাডা খালিস্তানি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কপটভাবে কাজ করছে। কানাডার এই ইস্যুর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি একটি জাতীয় অপমান।” তিনি কানাডার সরকারের সমালোচনা করে আরও বলেন, “এটা বহু বছর ধরে এতটা অবহেলিত হয়েছে, যা দেশের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।”
এছাড়া, মাইলেভস্কি ফেসবুক এবং কানাডিয়ান নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি বাণিজ্যিক আলোচনা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়া টুডে’ যদি ব্লক হয়ে থাকতো, তা হলে আমি আপনাকে বলতাম। কিন্তু এই সাইটটি কখনও ব্লক হয়নি, এটা শুরু থেকেই অ্যাক্সেসযোগ্য ছিল। কানাডায় কী ঘটছে তার পেছনে একটি বাণিজ্যিক আলোচনা আছে।”
তিনি আরো বলেন, “যদি আপনি শুধু ফেসবুকের মাধ্যমে সাইটটি দেখতে চান, তাহলে সমস্যা হতে পারে। তবে যদি আপনি সরাসরি সাইটে যান, কোনও সমস্যা নেই। এই বিতর্কের পেছনে ফেসবুক ও কানাডিয়ান নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।”
মাইলেভস্কি তার সাক্ষাৎকারে খালিস্তানি হামলার বিষয়েও মন্তব্য করেছেন, বিশেষত ব্র্যাম্পটনের হিন্দু সাবা মন্দিরে হামলার ঘটনা নিয়ে। তিনি এটিকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং কানাডার রাজনীতিবিদদের অবহেলার ফল হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, এবং এটা কানাডিয়ান রাজনীতিবিদদের ৪০ বছরের অবহেলার ফলস্বরূপ ঘটেছে।”
মাইলেভস্কি আরও যোগ করেছেন, “এটি খালিস্তানিদের দ্বারা সরাসরি আক্রমণ, যা হিন্দু মন্দিরগুলোকে লক্ষ্য করে। এটি খুবই উদ্বেগজনক, এবং দেশের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে।”
এই সব মন্তব্যের পাশাপাশি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং তার প্রভাব নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্ক ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বেশ ভালো, এবং মোদী নিজের প্রশাসনের প্রতি প্রশংসা করতে ব্যস্ত। ট্রাম্পের unpredictable নীতি অনেককেই ভাবিয়ে তুলেছে।”
একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয় হলো, সম্প্রতি কানাডা এবং ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে, কারণ কানাডা ভারতের অভিযোগ করেছে যে, ভারতের সরকার খালিস্তানি সন্ত্রাসী গুরুপতওয়ন্ত সিং পন্নুনের হত্যায় জড়িত। ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এটিকে প্রেরণাদায়ক” বলে অভিহিত করেছে।
এছাড়া, ব্র্যাম্পটনের হিন্দু মন্দিরে হামলার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। মাইলেভস্কি এটিকে একটি বড় উদ্বেগজনক বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা রোধের জন্য কানাডিয়ান সরকারের সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন।
কানাডিয়ান সাংবাদিকের এই মন্তব্যগুলি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং রাজনীতির আলোচনায় নতুন দৃষ্টি এনে দিয়েছে, বিশেষ করে কানাডার খালিস্তান বিষয়ক অবস্থান এবং ভারত-কানাডা সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে।