আনোয়ার আলির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নভেম্বরে পিএসসি’র চূড়ান্ত শুনানি

ভারতীয় ফুটবলে আনোয়ার আলির (Anwar Ali) নাম ইদানীং বহুল চর্চিত। তরুণ এই ডিফেন্ডারকে নিয়ে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতি শুধুমাত্র ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি…

Anwar Ali

short-samachar

ভারতীয় ফুটবলে আনোয়ার আলির (Anwar Ali) নাম ইদানীং বহুল চর্চিত। তরুণ এই ডিফেন্ডারকে নিয়ে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতি শুধুমাত্র ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেনি, বরং পুরো ভারতীয় ফুটবল মহলে আলোড়ন ফেলেছে। গত মরসুমে মোহনবাগানের হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স করা আনোয়ার এবারে যোগ দেন ইমামি ইস্টবেঙ্গলে, যা নিয়ে শুরু হয় একাধিক বিতর্ক। মূলত তাঁর ট্রান্সফার সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির (PSC) কাছে বিষয়টি ওঠে।

   

গত মরসুমে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হয়ে খেলেছিলেন আনোয়ার আলি এবং দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স ছিল চমকপ্রদ। এমনকি তাঁর চমৎকার ডিফেন্সিভ স্কিল এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী আক্রমণাত্মক ভূমিকা দলের জন্য খুবই উপকারী প্রমাণিত হয়। তবে নয়া মরসুমে যখন আনোয়ার ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেন, তখনই নতুন করে সমস্যার সূচনা হয়। মোহনবাগান আনোয়ারের দলবদল মেনে নিতে পারেনি এবং তাঁকে ফেরত পাওয়ার জন্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই পদক্ষেপে আনোয়ারের ইস্টবেঙ্গলে খেলা নিয়ে একাধিক বাধার সৃষ্টি হয়।

এরপর ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (AIFF) অধীনে থাকা প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির (পিএসসি) কাছে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। প্রথম পর্যায়ে পিএসসি থেকে আনোয়ারের খেলায় কোনও বাধা না থাকলেও, মোহনবাগান এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে। পরবর্তীতে দিল্লি হাইকোর্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখে এবং নতুন করে পুনর্বিবেচনার জন্য পিএসসিকে নির্দেশ দেয়।

আদালতের রায়ের পর আবারও নতুনভাবে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) পান আনোয়ার, যার ফলে আপাতত ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলা চালিয়ে যেতে তাঁর কোনো বাধা থাকে না। এটি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য স্বস্তি নিয়ে আসে, কারণ তাঁরা নিজেদের প্রিয় দলের রক্ষণভাগে আনোয়ারকে দেখতে আগ্রহী ছিলেন। তবে ইস্টবেঙ্গলের রঙে খেলা চালিয়ে গেলেও, আনোয়ারের ট্রান্সফার নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য সকলের নজর থাকে পিএসসির পরবর্তী শুনানির দিকে।

মূলত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে এই শুনানি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আনোয়ারের আইনজীবীর অসুস্থতার কারণে সেই সময়ে শুনানি স্থগিত রাখা হয়। এরপর পুনরায় দিন ধার্য করা হলেও আজও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। এই পরিস্থিতিতে আনোয়ারের ক্যারিয়ার এবং ইস্টবেঙ্গল দলের রক্ষণভাগ নিয়ে সংশয় থেকে যায়। প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি আজ উভয় পক্ষের মতামত শুনে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আগামী ৩০ নভেম্বর।

এই সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে আনোয়ারের ভবিষ্যৎ এবং ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণভাগের শক্তি। দীর্ঘদিন ধরেই ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা চাইছেন, আনোয়ার ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলা চালিয়ে যান এবং রক্ষণভাগকে আরও শক্তিশালী করে তোলেন। তবে এই নিয়ে মোহনবাগান সমর্থকরাও ইচ্ছুক আনোয়ারকে দলে ফেরত আনার জন্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, পিএসসি’র চূড়ান্ত রায় আনোয়ারের পেশাগত জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।

ভারতীয় ফুটবল মহলে এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, ৩০ নভেম্বর কি হবে? পিএসসি আনোয়ার আলির ইস্টবেঙ্গলে খেলা অব্যাহত রাখবে নাকি মোহনবাগানের পক্ষ নিয়ে কোনও নতুন সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এই জটিল পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে দুই ক্লাবের সমর্থকরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ফুটবলপ্রেমীদের মতে, বিষয়টি দ্রুত মিটিয়ে নেওয়া উচিত যাতে আনোয়ার মন দিয়ে খেলার সুযোগ পান। একই সঙ্গে ভারতীয় ফুটবল বোর্ড এবং ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও এই ধরনের বিতর্ক এড়াতে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হচ্ছে।